পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
ঈদের আগে শেষ সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে দেখা দেয়া চাঙাভাব ঈদের পরও অব্যাহত রয়েছে। আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা পেয়েছে দেশের শেয়ারবাজার।
এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। টানা ৯ দিন বন্ধ থাকার আগে টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। ফলে শেষ ৬ কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকল।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানো, আইপিও এবং প্লেসমেন্ট বাণিজ্য বন্ধ, উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপের কারণে বাজারে চাঙাভাব ফিরে এসেছে। এ ছাড়া বাজেটে শেয়ারবাজারকে গুরুত্ব দেয়া হবে বলে অর্থমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন। সম্প্রতি যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে সামনে বাজার আরও ভালো হবে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়শনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘সম্প্রতি শেয়ারবাজারের জন্য বেশকিছু ভালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাজেটেও প্রণোদনা দেয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বাজারে এসব উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক।’
প্রধান মূল্য সূচকের মতো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অপর দু’টি মূল্য সূচকেও ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে।
মূল্য সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৫টির এবং দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৩টির।
মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৯৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
বাজারটিতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে জেএমআই সিরিঞ্জ এবং ১৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা লেনদেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিবিএস কেবলস।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, কেপিসিএল, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন হাউজিং, নিউ লাইন ক্লোথিং এবং ডরিন পাওয়ার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স ৯৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৬০ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকার। লেনদেন অংশ নেয়া ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭৫টির, কমেছে ৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির।
এমএএস/এসআর/পিআর