ভালো ঋণগ্রহিতাদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ১৬ মে ২০১৯

আবারও ভালো ঋণগ্রহিতাদের প্রণোদনা দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে ২০১৬ সালে ভালো গ্রাহকদের প্রণোদনা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ব্যাংক খাতের এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। কিন্তু ওই নির্দেশনা পরিপালন করেনি কোনো ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। সার্কুলারে ভালো ঋণগ্রহিতা চিহ্নিতকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি ও তাদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়ে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, ভালো ঋণগ্রহিতাদের চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট হারে রিবেট দেয়ার মাধ্যমে তাদের প্রণোদনা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হলেও ভালো ঋণগ্রহিতারা ওই সুবিধা সঠিকভাবে পাচ্ছেন না। তাই ভালো ঋণগ্রহিতাদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি এখন থেকে নিশ্চিত করতে হবে।

সার্কুলারে বলা হয়, কোনো গ্রাহক সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পূর্ববর্তী ৪টি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধ করলে তিনি ভালো গ্রাহক হিসেবে বিবেচিত হবেন। তবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে তিনি ভালো গ্রাহক হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

অন্যদিকে মেয়াদি ঋণগ্রহিতার ক্ষেত্রে ঋণ হিসাব বিগত ১২ মাসের সব কিস্তি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হলে এবং সংশ্লিষ্ট বছরের সেপ্টেম্বর মাস ও পূর্ববর্তী ৪ ত্রৈমাসিকে অশ্রেণিকৃত-স্ট্যান্ডার্ড অবস্থায় থাকলে সংশ্লিস্ট গ্রাহক ভালো ঋণগ্রহিতা হিসেবে বিবেচিত হবেন। কোনো ঋণগ্রহিতার একাধিক ঋণ থাকলে প্রতিটি ঋণের জন্য পৃথকভাবে উল্লেখিত শর্ত পরিপালন করলেই তিনি ভালো ঋণগ্রহিতা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

তবে সব ক্ষেত্রেই কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিগত ১২ মাসে কোনো গ্রাহক বা তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত ঋণ থাকলে ওই গ্রাহক ভালো ঋণগ্রহিতা হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

ভালো ঋণগ্রহিতাদের প্রণোদনা প্রদানের ক্ষেত্রে কি কি বিষয় অনুসরণ করতে হবে এ সংক্রান্ত নীতিমালাও সংযুক্ত করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে বলা হয়েছে, চলমান, তলবি ও মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাস শেষে বিগত ১২ মাসে ভালো ঋণগ্রহিতার সংশ্লিষ্ট ঋণের বিপরীতে আদায় করা সুদ বা মুনাফার ন্যূনতম ১০ শতাংশ রিবেট সুবিধা প্রদান করতে হবে। পরবর্তীতে প্রতিবছর গ্রাহক ভালো ঋণগ্রহিতা হিসেবে চিহ্নিত হলে একই রকম সুবিধা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ভালো ঋণগ্রহিতার প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ঋণ সুবিধাও প্রদান করা যাবে।

প্রতিটি ব্যাংকের পর্ষদে অনুমোদিত ভালো ঋণগ্রহিতাদের প্রণোদনা প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এ সংক্রান্ত সুবিধা প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য প্রতিটি শাখায় তা সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

ভালো ঋণ গ্রহিতাদের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক কেইস টু কেইস ভিত্তিতে রিবেট হিসাবায়ন করতে হবে এবং ঋণগ্রহিতার প্রাপ্যতা অনুযায়ী প্রদান করতে হবে। এ সুবিধা পাওয়ার জন্য ঋণগ্রহিতার আবেদন করতে হবে না। ব্যাংক স্ব-উদ্যোগে এ সুবিধা দেবে।

ভালো ঋণগ্রহিতাদের ঋণতথ্য পরবর্তীতে স্ট্যান্ডার্ড থাকা সাপেক্ষে সিআইবিতে স্ট্যান্ডার্ড গুড ব্রোয়ারস (এসটিডি-জিবি) হিসেবে রিপোর্ট করতে হবে। তবে পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন ঋণগ্রহিতাদের জন্য এসব সুবিধা প্রযোজ্য হবে না বলেও সার্কুলারে বলা হয়েছে।

ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী ভালো ঋণগ্রহিতাদের বিশেষ সুবিধা যেমন রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ডিসকাউন্ট সুবিধা প্রদান করতে হবে।

সেরা ১০ জন ভালো ঋণগ্রহিতার ছবিসহ তাদের ব্যবসা সফলতার সংক্ষিপ্ত চিত্র ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করার পাশাপাশি স্বীকৃতি প্রদানসহ সম্মাননা প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এসআই/এনডিএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।