ফণীর প্রভাব নেই কাঁচাবাজারে
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ০৪ মে ২০১৯
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। সব ধরনের সবজি, মাছ ও মাংসের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজিপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ফণীর কারণে রাজধানীতে সবজি আসার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। যে কারণে শনিবার রাজধানীর বাজারগুলোতে কোনো সবজির দাম বাড়েনি। বরং গতকালের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমেছে।
তারা বলছেন, রাজধানীবাসীর একটি বড় অংশই শুক্রবার বাজার করেন, যে কারণে শুক্রবার ক্রেতাদের চাপ বেশি থাকায় সবজির দাম তুলনামূলক বেশি থাকে। আর শনিবার ক্রেতাদের চাপ কম থাকায় স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমে যায়।
ব্যবসায়ীদের অভিমত, ফণীর কারণে এখানও সবজির দাম না বাড়লেও বাড়ার আশঙ্কা রয়ে গেছে। যদি টানা বৃষ্টি হয় অথবা বন্যা হয় তাহলে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যাবে। তাছাড়া গতকাল যে বৃষ্টি হয়েছে তার প্রভাবে দু’একদিনের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে, কাকরোল, করলা ও কচুর লতি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, গতকাল শুক্রবারও এ সবজিটির দাম এমন ছিল। কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, যা গতকাল ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
শুক্রবার ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আর ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কচুর লতি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে।
দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে শসা, বেগুন, পাকা টমেটোও। শুক্রবার ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম কমে ২০ থেকে ৩০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বেগুন পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে, যা গতকাল ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। পাকা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজির মধ্যে, যা গতকাল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি।
অধিকাংশ সবজির দাম কমলেও কয়েকটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে- পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে রাজধানীতে সবজির গাড়ি প্রবেশে কোনো সমস্যা হয়নি। ফলে সবজির সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। যে কারণে নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে গতকাল যে বৃষ্টি হয়েছে এর কারণে আগামী শুক্রবার কিছুটা দাম বাড়তে পারে। আর বৃষ্টির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সব ধরনের সবজির দাম বেশ বেড়ে যাবে।’
রামপুরার ব্যবসায়ী ইসমাইল বলেন, ‘রাজধানীবাসীর বড় অংশই সাপ্তাহিক বাজার করেন শুক্রবার। এ কারণে শুক্রবার সবজির দাম একটু বেশি থাকে। আর শনিবার ক্রেতাদের চাপ কম থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দাম কম থাকে। ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও তা সবজি পরিবহনে কোনো সমস্যা করতে পারেনি। যে কারণে আজ সবজি সরবরাহে ঘাটতি হয়নি বলে দাম বাড়েনি।’
এদিকে রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, বয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়, লাল লেয়ার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং পাকিস্তানি কক মুরগি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবারও মুরগি একই দামে বিক্রি হয়।
মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম, গরু-খাসির মাংস ও পেঁয়াজ-মরিচের। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। গরুর মাংস ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দামও। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।
এমএএস/এনডিএস/জেআইএম