জিএসপি ফিরে পেতে আর বাধা নেই


প্রকাশিত: ১২:৩৯ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জিএসপি ফিরে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ১৬ শর্ত পূরণ হয়েছে। এখন জিএসপি ফিরে পেতে আর কোনো বাধা নেই।
 
বৃহস্পতিবার মন্ত্রী বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি-এর নির্বাহী পরিচালক জিম মরিয়ার্টির নেতৃত্বে আগত চার সদস্যের অ্যালায়েন্স ডেলিগেশনের সাথে মতবিনিময় করে সাংবাদিকদের একথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, শর্ত পূরণ হওয়ায় এখন আর জিএসপি ফিরে পেতে বাধা নেই। অল্প কিছু দিনের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর-এর প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবেন, তারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার অভূতপূর্ব উন্নতিতে তারা সন্তুষ্ট হবেন বলে মনে করি। এরপর বাংলাদেশের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউএসটিআর-এর সাথে বৈঠক করবেন। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের উপর থেকে জিএসপির স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার করা হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর কোনো দেশকেই তৈরি পোশাকের উপর জিএসপি সুবিধা দেয় না। বাংলাদেশও জিএসপি স্থগিতের আগে তৈরি পোশাকের উপর এ সুবিধা পেতো না বলে জানান তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, একক দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। জিএসপি স্থগিত হবার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জিএসপি স্থগিতের ফলে আর্থিক তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও ইমেজ সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আশা করছে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর বিল্ডিং সেফটি, ইলেট্রিক সেফটি, ফায়ার সেফটি এবং ওয়াকার্স সেফটির বর্তমান অবস্থা দেখলে জিএসপি স্থগিত রাখার কোনো কারণ থাকবে না। কিছুদিন আগে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ প্রায় ১০ জন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিভন্ন তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেছেন। তারা এ শিল্পের উন্নয়ন, সেফটি, শ্রমিকদের অধিকার এবং কর্মবান্ধব পরিবেশ দেখে ভুয়শী প্রশংসা করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি পোশাক শিল্প গড়ে উঠলেও আজ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্বমানের। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গত আড়াই বছরে বাংলাদেশে আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। উন্নতবিশ্বে তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা, শ্রমিকদের অধিকার এবং কর্মবান্ধব পরিবেশের কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ক্রেতাদের অ্যাকোর্ড বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো ধারাবাহিকভারে পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছে।  

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইপিজেড এ শ্রমিকদের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের কল্যাণে সেখানে ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কার্যকর আছে। সেখানকার শ্রমিকদের কোনো অভিযোগ নেই। শ্রমিকরা ইউপিজেড-এর বাইরের কোনো শ্রমিকনেতাকে তারা চায় না।

তারা নিজেদের মধ্য হতে শ্রমিক নেতা তৈরি করে থাকেন। একটি প্রতিষ্ঠানের মোট শ্রমিকের ৩০ শতাংশ শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করার জন্য আবেদন করলেই সেখানে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করার অনুমতি প্রদান করা হয়। বর্তমান সরকার শ্রমিকদের বেতন ২১৯ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। বেতন, নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ নিয়ে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট।  

অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি-এর নির্বাহী পরিচালক জিম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তৈরি পোশাক কারখানার কাজের পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

এসএ/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।