দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন ব্যাংকাররা


প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অনিয়ম আর দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে ব্যাংকাররা। দিন দিন তাদের মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রবণতা বাড়ছে। সবশেষ বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংকের চাকুরিচ্যুত এক কর্মকর্তাকে এলিট ফোর্স র‌্যাব আটক করেছে বৃহস্পতিবার। প্রায় ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত তিনি।

শুধু এনসিসি ব্যাংক নয়। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী, বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে। এতে অর্থ খাতে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান জাগো নিউজকে বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করাটা জরুরি। ইদানিং এ খাতের পেশাজীবীদের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এটা উদ্বেগজনক। এটি এখনই বন্ধ করতে হবে।

সূত্র বলছে, মেয়াদ শেষের আগেই অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি ঠিক করে রাখছেন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। আর তারাই জড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন অনিয়মে। ব্যাংকের আমানতের অর্থ তারাই সরিয়ে ফেলছেন। ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, ভুয়া হিসাব খুলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মতো নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন কর্মকর্তারা। ঋণ অনিয়মে জড়াচ্ছেন পর্ষদ সদস্যরাও।

এসব অপরাধ করে কেউ কেউ দেশেই জমি, ফ্ল্যাট, গাড়ি কিনে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। কেউ আবার বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। ব্যাংকিং খাতে বর্তমান কর্মরত দেড় লাখের মতো কর্মকর্তা।

সূত্র বলছে, গত ৫ বছরে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়লেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। এ কারণে অন্যদের মধ্যেও তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে ব্যাংকিং খাতে অপরাধ।

দেশে ব্যাংকিং ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলমার্ক কেলেঙ্কারি। সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয় হলমার্কসহ ছয় প্রতিষ্ঠান। ২০১২ সালে এ অনিয়ম উদঘাটন হওয়ার পর এমডিকে অপসারণ ও পর্ষদ ভেঙে দেয়া হলেও দৃশ্যমান কোনো শাস্তি এখনও হয়নি জড়িত কর্মকর্তাদের।

২০১২ ও ২০১৩ সালে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয় বেসিক ব্যাংকে। এ ঘটনায় গত বছর ব্যাংকটির এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পুরনো পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদও গঠন করা হয়। এ ঘটনায়ও জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার হয়নি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ব্যাংকারদের সর্তক করে দিয়েছি। কোন ধরনের অনিয়ম আর অপরাধে জড়ালে নূন্যতম ছাড় দেয়া হবে না। অবশ্যই দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তি পেতে হবে।

এসএ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।