বিনিয়োগকারীদের প্রতীকী গণঅনশনের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে আগামী ২৯ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে প্রতীকী গণঅনশনের ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ডিএসইর সামনে মনববন্ধন করে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ গণঅনশনের ঘোষণা দেয়া হয়। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে লিফলেটও বিতরণ করা হয়।

বিনিয়োগকারীরা বলেন, এরইমধ্যে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার অনেক মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে অবশ্যই বাজারকে গতিশীল করতে বিভিন্ন বিষয় চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

এদিকে বিতরণ করা লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, চার মাস ধরে পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলো বাজারের এ পতন ঠেকাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই বাজারের এ পতন ঠেকাতে এবং বাজারকে স্থিতিশীল করার দাবিতে সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতীকী গণঅনশনের আয়োজন করা হয়েছে।

Investor.

গণঅনশনের ডাক দিয়ে বিতরণ করা এ লিফলেটে ১২টি দাবির কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে-

১. সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনসহ সব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে।

২. যে সমস্ত কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে এবং করবে ওই সমস্ত কোম্পানিকে বাধ্যতামূলকভাবে ন্যূনতম ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। জেড গ্রুপের এবং ওটিসি মার্কেট বলতে কোনো মার্কেট থাকতে পারবে না।

৩. দুর্বল কোম্পানির আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।

৪. খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. ২ সিসি আইনের বাস্তবায়ন করতে যে সব কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ব্যক্তিগত ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই ওই উদ্যোক্তা পরিচালকদের এবং কোম্পানিগুলোকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৬. পুঁজিবাজারে অর্থের জোগান বৃদ্ধির জন্য সহজ শর্তে ৩ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। যা আইসিবি, বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে ৫ শতাংশ হারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ঋণ হিসেবে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।

৭. পুঁজিবাজারের প্রাণ মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে পুঁজিবাজারে সক্রিয় হতে বাধ্য করা এবং প্রত্যেক ফান্ডের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে কমপক্ষে ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে এবং মেয়াদ না বাড়িয়ে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে উন্মুক্ত ফান্ডে রূপান্তর করতে হবে।

৮. পুঁজিবাজার সংক্রান্ত যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

৯. ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট-২০১৫ বাস্তবায়ন ও বাইব্যাক আইন চালু করতে হবে।

১০. আইপিওর শেয়ারে সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৮০ শতাংশ কোটি দিতে হবে।

১১. ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মার্জিন লোনের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করতে হবে।

১২. ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিপরীতে বাংলাদেশ স্টক এক্সচেঞ্জ নামে বিকল্প স্টক এক্সচেঞ্জ করতে হবে। এর ফলে কারসাজি বন্ধ করা যাবে।

এমএএস/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।