বিএসইসির উদ্যোগে কারসাজি চক্র উৎসাহিত হয় : সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৪ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িত দুষ্টচক্রকে থামাতে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বড় কোনো উদ্যোগ নেয় না- এমন অভিযোগ তুলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পক্ষ থকে বলা হয়েছে, অনিয়মের বিরুদ্ধে যে ধরনের অর্থদণ্ড দেয়া হয় তাতে কারসাজি চক্র অনিয়ম করতে আরও উৎসাহিত হয়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিপিডি পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে এ মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সিপিডি।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে বিএসইসির যে ধরনের জোরালো ভূমিকা নেয়ার কথা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা দেখা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিএসইসি পদক্ষেপ নেয় বটে, তবে বাজারের কারসাজি বন্ধে দুষ্টচক্র থামানোর যে উদ্যোগ নেয়ার কথা, সেক্ষেত্রে বড় কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।

‘এমনকি এমন অভিযোগ রয়েছে- একজন যে পরিমাণ অনিয়ম করে থাকে, তার বিরুদ্ধে যে অর্থদণ্ড হয়, তাতে এ ধরনের কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা আরও উৎসাহিত হন। তার কারণ আর্থিক দণ্ড তার জন্য খুব বেশি সমস্যার না। সুতরাং সুশাসনের ক্ষেত্রে ছাড়া দিয়ে পুঁজিবাজারকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই’ যোগ করেন সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক।

আগামী দিনে শেয়ারবাজার সংস্কারের ওপর সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এমন মন্তব্য করে তিনি বলন, ‘আমরা সুশাসনের বিষয়ে ২০১০ সালেও বলেছি। এখনও সেই ঘাটতি রয়েছে। এখনও সুশাসনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ছাড় দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এছাড়া বর্তমান সরকারের গত ১০০দিনে শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনয়নে সুশাসন দেখা যায়নি।’

শেয়ারবাজারের বর্তমান চিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর পরই আমরা বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখলাম। এক মাস পর আবার সূচক আগের অবস্থানে চলে আসলো। এখানে কৃত্রিমভাবে শেয়ারবাজারের উল্লম্ফন করা হয়েছিল কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় এবং বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিককালে মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে। যেখানে এক ধরনের নিয়ন্ত্রিত ওঠা-নামানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। শেয়ারবাজারে এ ধরনের ওঠা-নামা হওয়ার কথা না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ওঠা-নামা হওয়ার কথা।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময় শেয়ারবাজারে কিছু সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। এরমধ্যে একটি বড় সমস্যা প্লেসমেন্ট শেয়ার। এ নিয়ে গণমাধ্যমে নিউজ এসেছে। যেখানে ইনফরমাল মার্কেট গড়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে এবং সরকার বিষয়টি সংস্কারে কাজ করছে।

এ সময় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক। তিনি বলেন, যে কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনা হচ্ছে এবং এক্ষেত্রে যে রিপোর্টি জমা দেয়া হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে। এমনকি বিএসইসির চেয়ারম্যানও রিপোর্টগুলো নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।

‘যে রিপোর্টগুলো তথ্য-উপাত্তের দিক দিয়ে ভুল। যেখানে অনেক ধরনের দুষ্টতা থাকতে পারে। যে কারণে নতুন কোনো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসার কিছুদিন পরে অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে যায়। এখান থেকে প্রতিয়মান হয় যে, কোম্পানিগুলো যেভাবে এবং যারা মূল্যায়ন করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় কোনো ধরনের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না’ বলেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চলনায় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

এমএএস/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।