রমজান সামনে রেখে বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০১ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯
ফাইল ছবি

পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। শাক-সবজি এবং মাছ-মাংসও আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা ভালোমানের দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি করছেন ১২০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১০০ টাকা। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা পাল্লা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে চার এবং আলু দুই টাকা বেড়েছে।

এদিকে রামপুরা ও খিলগাঁও এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি করছেন ২৮-৩০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫ টাকা। আর প্রতিকেজি আলুর বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫ টাকা। অর্থাৎ খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর দাম কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, এবার পেঁয়াজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। নতুন পেঁয়াজ সাধারণত মজুদ করা কঠিন, তাই বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় অনেকদিন ধরেই পেঁয়াজের দাম কম ছিল। এখন সব পেঁয়াজ শুকিয়ে গেছে, ফলে আস্তে আস্তে মজুদে চলে যাচ্ছে। যে কারণে কিছুটা দাম বাড়ছে। আমাদের ধারণা সামনে আরও দাম বাড়বে।

আলুর দাম বাড়ার বিষয়ে প্রায় একই কথা বলেন ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন। তিনি বলেন, এবার আলুর বাম্পার ফলন হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই সস্তায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সস্তায় আলু খাওয়ার দিন শেষে হয়ে আসছে। আস্তে আস্তে আলু মজুদের পাশাপাশি বাজারে সরবরাহ কমছে। ফলে দামও বাড়ছে।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ রমজান সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।

এ বিষয়ে খিলগাঁওযের বাসিন্দা মামুন বলেন, রোজায় আলু-পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। রোজা আসতে আর এক মাসও বাকি নেই। তাই আগে থেকেই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ব্যবসায়ীরা আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে সবকিছু চলে ইচ্ছামাফিক। যে যেমনভাবে পারে ফায়দা হাতিয়ে নেয়। দেখভাল করার যেন কেউ নেই। প্রতিবছরই রোজার আগে বাজারে কঠোর তদারকি করা হবে, দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে এমন হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। ফলে মুনাফালোভীরা কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

রোজা সামনে রেখে আলু পেঁয়াজের দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। বাজারভেদে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০-১০৫ টাকা।

ডিমের দামের বিষয়ে হাজিপাড়ার ডিম ব্যবসায়ী সাবু মিয়া বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। সামনে দাম আরও কমতে পারে। কারণ রোজায় সাধারণত ডিমের চাহিদা কম থাকে।

এদিকে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো ও শসা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ পণ্য তিনটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা, সজনে ডাটা ৬০-৮০, বরবটি ৬০-৭০, কচুর লতি ৭০-৮০, করলা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। প্রতি কেজি ধুন্দুল ৭০-৮০, বেগুন ৪০-৬০, মুলা ৪০-৫০, গাজর ৩০-৪০, এবং ঢেঁড়শ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের মতই বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭৫ টাকা কেজি দরে। লাল লেয়ার মুরগি ২১০-২২০, আর পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকা কেজিতে। মুরগির মত দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।

বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০-৫৫০ টাকা কেজি। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়।

মাংসের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজিতে। পাঙাশ ১৫০-১৮০, রুই ৩৫০-৬০০, পাবদা ৬০০-৭০০, টেংরা ৭০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল বিক্রি হচ্ছে ৬০০- ৮০০ টাকা কেজি।

এমএএস/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।