ভিন্নধর্মী রেকর্ড উচ্চ প্রিমিয়ামের এস্কয়ার নিটের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে ভিন্নধর্মী এক রেকর্ড গড়েছে উচ্চ প্রিমিয়াম নিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এস্কয়ার নিট কম্পোজিট। তালিকাভুক্তির পর শেয়ারবাজারে প্রথম লেনদেন কর্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে মাত্র ৭০ পয়সা। এস্কয়ার নিটের আগে দেশের শেয়ারবাজারে প্রিমিয়াম নিয়ে তালিকাভুক্ত হওয়া কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম লেনদেনের প্রথমদিন এতো কম বাড়েনি।

ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ভবন নির্মাণ, ইয়ান ডাইং মেশিন ক্রয়, ওয়াশিং প্ল্যান্ট মেশিন ক্রয় এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করা এস্কয়ার নিটের শেয়ার লেনদেন মঙ্গলবার শুরু হয়েছে।

লেনদেন শুরুর আগে এস্কয়ার নিট কম্পোজিট চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর ১৮) মুনাফার তথ্য প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয় ২ টাকা ৪ পয়সা।

আগের বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করে ১৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এতে ইপিএস দাঁড়ায় ১ টাকা ৮৫ পয়সা। এ হিসাবে নিট মুনাফা বেড়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং ইপিএস বেড়েছে ১৯ পয়সা। মুনাফা বাড়ার সংবাদ আসলেও তা কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াতে পারেনি।

লেনদেনের প্রথমদিন কোম্পানিটির শেয়ার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪৫ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৫৯ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরুর দাম ছিল ৪৫ টাকা। এর থেকে ২ টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে প্রথম লেনদেন প্রস্তাব আসে ৪৭ টাকা ৩০ পয়সায়। তবে শেষ লেনদেন হয়েছে ৪৫ টাকা ৭০ পয়সায়। অর্থাৎ প্রথমদিন কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে মাত্র ৭০ পয়সা।

বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটি ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের এপ্রিলে রোড শো করে প্রতিষ্ঠানটি।

ওই রোড শোতে এস্কায়ার নিট কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৫৭৬ কোটি টাকার ব্যবসা সম্প্রসারণ করবে। এরমধ্যে শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে ১৫০ কোটি টাকা। বাকি অর্থের মধ্যে ৩৪০ কোটি টাকা বৈদেশিক এবং দেশি ঋণ ও ৮৬ কোটি টাকা কোম্পানির মুনাফা থেকে সংগ্রহ করা হবে।

শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকার মধ্যে ১০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা দিয়ে ভবন নির্মাণ, ২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা দিয়ে ইয়ার্ন ডাইং মেশিন ক্রয়, ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে ওয়াশিং প্ল্যান্ট মেশিন ক্রয় ও বাকি ৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আইপিও বাবদ খরচ করা হবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

রোড শোর প্রায় এক বছর পর ২০১৮ সালে কোম্পানিটির শেয়ারের কাট অফ প্রাইস নির্ধারণে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির অনুমোদন পেয়ে ওই বছরের ৯ জুলাই থেকে ১২ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা। বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাট অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৪৫ টাকায়।

এরপর গত বছরের ২৭ নভেম্বর বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৩টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু করার অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

এরপর কোম্পানির ১ কোটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ৫০১টি সাধারণ শেয়ার ৪০ টাকা মূল্যে (কাট অফ প্রাইস থেকে ১০ শতাংশ বাট্টায়) সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হয়। অর্থাৎ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের জন্য প্রিমিয়াম নেয়া হয় ৩০ টাকা। বাকি ২ কোটি ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩২টি শেয়ার ৪৫ টাকা মূল্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যু করা হয়।

এ হিসাবে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের যে কাট অফ প্রাইস নির্ধারণ করেছেন, লেনদেনের প্রথমদিন তার থেকে মাত্র ৭০ পয়সা বেড়েছে। তবে বিডিংয়ে বেশকিছু যোগ্য বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ারের জন্য ৪৫ টাকার উপরে দর প্রস্তাব করেন।

এমএএস/এনডিএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।