গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি মরার উপর খাঁড়ার ঘা : ইএবি
২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের শুরুতেই (জুলাই মাসে) যেখানে সার্বিক রফতানি বৃদ্ধি ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ ঋণাত্মক ধারায় এসেছে ঠিক তখন গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের রফতানি খাতের উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা বলে মনে করছেন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী।
গত বৃহস্পতিবার গ্যাসের মূল্য ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ ও বিদ্যুতের মূল্য দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন দর কার্যকর হবে। এমন ঘোষণায় ইএবি-এর পক্ষ থেকে শনিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি বলছে, রফতানি খাতের সক্ষমতা অর্জনে আবারো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে সরকার।
ইএবির মতে, আগে থেকেই ইউরোজোনে ইউরোর অস্বাভাবিক অবমূল্যায়ন হয়েছে। এছাড়াও বিদেশি ক্রেতা কর্তৃক ক্রমাগত পণ্যের মূল্যহ্রাস এবং প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রফতানি খাতে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একরকম দিশেহারা। সেই মুহূর্তে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানো আমাদের রফতানি খাতের উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, রফতানিমুখি সকল প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়ার অন্যতম উপাদান গ্যাস ও বিদ্যুৎ। এই দুটির মূল্য বৃদ্ধির ফলে রফতানি খাতের সার্বিক উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এমতাবস্থায়, রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা আরো কষ্টসাধ্য হবে। আমরা প্রতিযোগী দেশসমূহের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে পিছিয়ে পড়বো এবং সক্ষমতা হারাতে থাকবো। এছাড়াও সার্বিক রফতানি খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ১১৪ ডলার থেকে নেমে ৩৯ ডলারের দাঁড়িয়েছে বিধায় প্রতিযোগী দেশগুলো বিশেষ করে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ক্যাম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া একাধিকবার জ্বালানি তেলের দর কমিয়েছে।
আরো উল্লেখ্য যে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে। এক্ষেত্রেও বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম এবং টাকা অতিমূল্যায়িত হয়ে রয়েছে। ফলশ্রুতিতে আমাদের রফতানি সংশ্লিষ্ট সকল খাত কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দর পতনের কারণে আমাদের দেশে জ্বালানি সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎখাতে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়নি। তাই বাস্তবতার নিরিখে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে আগামী এক বছর রফতানি সংশ্লিষ্ট সব খাতকে, তার সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকটি বিবেচনায় নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
এসআই/বিএ