স্বপ্নের পায়রা বন্দর নির্মাণে আসছে কোরিয়ান পরামর্শক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৯

দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বপ্নের প্রকল্প পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণে কোরিয়ান কোম্পানি কুল হুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকর। ৮৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন, কানেকটিং রোড ব্রিজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরামর্শ দেবে প্রতিষ্ঠানটি।

আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘পায়রা বন্দর আমাদের আশা জাগানিয়া প্রকল্প, আমাদের স্বপ্নের বন্দর। এক বন্দর বাস্তবায়ন করতে পারলে আমাদের পদ্মা সেতু ও পদ্মা রেলওয়ে উপকৃত হবে। পুরো দক্ষিণ ও পশ্চিত অঞ্চল অত্যান্ত শক্তিশালী হবে। সে এলাকার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।’

পায়রা বন্দরের ফলে অসংখ্য শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের মতো না হলেও একই রকম আরও একটি বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে উঠবে। পায়রা বন্দর দিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটান এমনকি চিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব আমরা। এ বন্দরের মাধ্যমে আমরা সবাইকে একই মোহনায় পাব।’

পায়রা বন্দর বাস্তবায়নে পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে কোরিয়ান কোম্পানি কুল হুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। এজন্য কোম্পানিটি নেবে ৮৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পায়রা বন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। এটিকে আরও ভালোভাবে বাস্তবায়নের জন্য এ পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হলো।’

পায়রা বন্দর প্রস্তুত হতে কত দিন সময় লাগবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘৫ থেকে ৭ বছর তো লাগবেই। এটা অনেক বড় কর্মযোগ্য। হাজার হাজার মানুষ কাজ করবে।’

জানা গেছে, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের ১০টি বড় প্রকল্পের একটি। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ১৬ একর জমির ওপর এই বন্দর স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। জায়গাটি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ নদীর পশ্চিম তীরে। ২০৩০ সালের মধ্যে বন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনটি পর্বে এ কাজ সম্পন্ন হবে। এজন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০০ থেকে দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য পায়রা বন্দর নির্মাণের ঘোষণা দিলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা আশায় বুক বাঁধেন। এ অঞ্চলের অন্য সমুদ্রবন্দর মংলা কোনো সময়ই দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে পারেনি। বিশেষ করে মংলার প্রধান চ্যানেলে পশুর নদের দু’তীর ঘেঁষে সুন্দরবন থাকার পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে পিছিয়ে পড়ায় মংলা দিনের পর দিন বাণিজ্যের আস্থা হারিয়েছে।

এমইউএইচ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।