উপকূলীয় অঞ্চলের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পরিকল্পনামন্ত্রীর
‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বা ডেল্টা প্লানে দেশকে ছয়টি হটস্পট-এ বিভক্ত করা হয়েছে। এর একটি উপকূলীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নে বেশকিছু সমস্যা ও করণীয় তুলে ধরেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান। আর এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘প্রকৌশলী এম এ জব্বার মেমোরিয়াল লেকচার’-এ মূল প্রবন্ধ পাঠে বিভিন্ন সমস্যা ও করণীয় তুলে ধরেন হাবিবুর রহমান। এরপর পরিকল্পনামন্ত্রী সেসব ধীরে ধীরে সমাধানের আশ্বাস দেন।
প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বছরে প্রায় ১ মিলিয়ন টন পলি উপকূলভাগের নদ-নদীর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ার ফলে ৫ থেকে ১০ বর্গ কিলোমিটার নতুন চর জাগে। আবার নদী ভাঙনের কারণে বিপুল পরিমাণ জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র সমতলের উচ্চতা বাড়ছে। উপকূলীয় প্লাবন ও লবণাক্ততার অনুপ্রবেশের ঝুঁকিও বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় হয় এবং গড়ে দেশে প্রতি ৩ বছরে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। নদী প্রবাহ ও নিষ্কাশন সীমাবদ্ধতার কারণে গড়ে দেশের প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অঞ্চল প্লাবিত হয়।’
উপকূলীয় অঞ্চলের এসব সমস্যার সমাধানে কিছু করণীয় তুলে ধরেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রধান প্রকৌশলী। তিনি জানান, ঝড়বৃষ্টি/ জলোচ্ছ্বাস এবং লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ মোকাবেলায় আঞ্চলিক নদী এবং চ্যানেলগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে নদী প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ড্রেজিং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে এবং বন্যার ঝুঁকি কমাতে গ্রামীণ নদী ও খাল পুনরুদ্ধার করা। অভ্যন্তরীণ নদী ও খালগুলোর নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা। স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা।
উপকূলীয় অঞ্চলে জেগে ওঠা নতুন জমি সংরক্ষণ, উন্নয়ন করা এবং ল্যান্ডি জোনিং করতে হবে। সুন্দরবন সংরক্ষণে বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত ড্রেজিং অহ্যাহত রাখা এবং নতুন জেগে ওঠা জমিতে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে বলেও জানান হাবিবুর রহমান।
এরপর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে অর্থ বাড়ছে, এটা আমরা সবাই জানি। প্রতি বছর, প্রতি দশকে আমাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে। আমরা বাড়তি রাজস্ব পাব, বাড়তি অর্থ পাব, সেটা দিয়ে সেটা দিয়ে পর্যায়ক্রমে আমাদের ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন করতে পারব।’
‘সরকার প্রধানের কাছে প্রকল্প পেশ করার দায়িত্বে এই মুহূর্তে আমি আছি। জন কল্যাণমূলক, পেশার কল্যাণমূলক, রাষ্ট্র কল্যাণমূলক সব ধরনের প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তার সঙ্গে আমরা যারা কাজ করছি, আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব’, যোগ করেন এম এ মান্নান।
পিডি/জেএইচ/এমএস