সঞ্চয়পত্র : অতিরিক্ত বিনিয়োগ বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কালো টাকা এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগ বন্ধ করতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির কার্যক্রম পরিক্ষামূলকভাবে অটোমেশন (অনলাইন) পদ্ধতিতে শুরু করেছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতর। অটোমেশনে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সঙ্গে লিংক রয়েছে। তাই কেউ সীমার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র কিনছে কিনা সেটি সহজেই ধরা পড়বে। একইসঙ্গে সঞ্চয়পত্রে কালো টাকা বিনিয়োগরোধে ৫০ হাজার টাকার বেশি কেউ সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে তাকে চেকের মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট করতে হবে।

প্রাথমিকভাবে এ অটোমেশন (অনলাইন) পদ্ধতি চালু হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের ব্যুরো অফিস (গুলিস্তান) এবং বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের প্রধান কার্যালয়।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ সচিবালয়ে অর্থ বিভাগের সভা কক্ষে অভ্যন্তরীণভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শক্তিশালী করতে এ প্রকল্প চালু করার জন্য চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি অর্থ বিভাগে পাবলিক এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট স্ট্রেনদেনিং প্রোগ্রামের অধীনে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাস প্রথমিকভাবে চারটি অফিস থেকে অটোমেশনের সঞ্চয়পক্র বিক্রি কার্যক্রম চলানো হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এরপর আগামী অর্থ বছরের শুরুতে তথা ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী এটি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ জন্য ‘ন্যাশনাল সেভিং সার্টিফিকেটস অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’নামে সঞ্চয়পত্রের অনলাইন ডাটাবেজ তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।

নতুন এ ডাটাবেজ চালু হলে সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রের ই-টিন সনদ জমা দিতে হবে। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। টাকার পরিমাণ এর বেশি হলে অবশ্যই ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য সঞ্চয়কারীর ব্যাংক হিসাব নম্বর, মোবাইল নম্বর দিতে হবে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন তাদেরও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও ই-টিন সনদ জমা দিতে হবে। এ উদ্যোগের ফলে সঞ্চয়পত্রে প্রকৃত বিনিয়োগকারীরাই আসবে। একই সঙ্গে কালোটাকা বিনিয়োগকারীদের চিহ্নিত করা যাবে।

সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ এতটাই বেড়ে গেছে যে, বর্তমানে বছরে এ ঋণের সুদবাবদ সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায় বছরে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তার থেকেও এ ব্যয় এক হাজার কোটি টাকা বেশি। তাই শিগগিরই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লাগাম টানতে চায় সরকার। এ জন্য এ খাতে বিনিয়োগে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সঞ্চয়পত্র থেকে নিট বিনিয়োগ এসেছে ২১ হাজার ৬৬১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় প্রায় ৮৩ শতাংশ। সরকার চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১২ মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।

এমইউএইচ/এনডিএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।