বাণিজ্য মেলায় জামদানির কারিগর দেলোয়ার-ইয়াসমিন দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

বাঙালি সংস্কৃতির অনেক কিছু হারিয়ে গেছে। বেশকিছু জিনিস বিপন্নের পথে। এরকমই একটি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শাড়ি জামদানি। বই, সংবাদপত্র পড়ে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জেনেছেন জামদানি কীভাবে বোনা হয়।

তবে স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য বোধহয় খুব কম জনেরই হয়েছে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্যাভিলিয়ন ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)’ এবার সেই সুযোগ করে দিল।

প্যাভিলিয়নের বাইরের অংশে একটি কুটির ঘরে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত জামদানি বুনছেন দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন। জেডিপিসির সহায়তায় তারা মেলা উপলক্ষে জামদানি শাড়ির তাঁত এনে এখানে জামদানি বোনার কাজটি করছেন।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা জেডিপিসির বেতনভুক্ত নন। জেডিপিসি কাজ দিলে সেই কাজের ভিত্তিতে টাকা পান তারা। মেলা শুরুর ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় তারা মেলায় জামদানি শাড়ির তাঁত নিয়ে আসেন।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবর থেকে আসা এই দম্পতি জাগো নিজউকে বলেন, ‘জেডিপিসি তাদেরকে সুতা দেয়, সেই সুতা দিয়ে তারা জামদানি বুনে দেন। একেকটা জামদানি বুনতে ৭-৯ দিন সময় লাগে। আবার কোনো কোনো শাড়ি বুনতে ২-৩ মাসও লেগে যায়। সময় নির্ভর করে শাড়িতে কত বেশি কাজ করতে হয়, সেটার ওপর।’

কাজ ও মানভেদে এসব শাড়ি ৮ হাজার থেকে শুরু করে ৭০-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয় বলেও জানান দেলোয়ার ও ইয়াসমিন দম্পতি।

তবে এই শাড়ি বুনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় বলে জানিয়েছেন এই দম্পতি। তারা জানান, যারা জামদানি বোনে তাদের চেয়ে যারা জামদানি কিনে নিয়ে বিক্রি করে, তারাই বেশি সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। ওইসব মধ্যস্বত্বভোগীরা তাদের কাছ থেকে যে দামে কেনে, তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। মধ্যস্বত্বভোগীদের সঙ্গে ধনী ব্যক্তি, আড়ৎ, বড় প্রতিষ্ঠানের চুক্তি থাকে, সেসব জায়গায় তারা এগুলো বিক্রি করেন।

এই দম্পতির আয়ের একমাত্র উৎস জামদানি বুনন। তবে প্রতিযোগিতামূলক এই বাজারে তারা কতদিন টিকে থাকতে পারবেন তা নিয়ে শঙ্কায় প্রকাশ করেছেন।

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।