শ্রমিক অসন্তোষ : প্রতিনিধি দল তৈরির আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১০ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ তৈরি পোশাক খাতে অসন্তোষ দূর করতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি জানান, এই প্রতিনিধি দল মালিক পক্ষসহ সরকারের সঙ্গে শ্রমিকরা প্রতিনিধিত্ব করবে।

শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘পোশাকখাতে সাম্প্রতিক মজুরি বিতর্ক : কী শিখলাম?’ বিষয়ক আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানান তিনি। এ সময় সিপিডির পক্ষ থেকে মন্ত্রীর এ প্রস্তাবের প্রশংসা করা হয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানকে এই কাজ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন তিনি। তাকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাকে বলব, আপনারা বিষয়টা পুরোপুরিভাবে দেখেন।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘আমি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় চাই, সামনের দিনগুলোতে পাঁচ জনের একটা প্রতিনিধি দল যদি শ্রমিক পক্ষ থেকে হয়, সময় সময় তাদের সঙ্গে আলাপ করে সমস্যাগুলো বিবেচনা করতে পারব। মালিক পক্ষকেও ডাকতে পারব। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন, ‘কোনো শ্রমিককে যদি কোনো মালিক অন্যায়ভাবে বের করে দেয় সেটা গ্রহণযোগ্য না। কেননা সেটা অমানবিক। স্বার্থের জন্য অন্যায়ভাবে কাউকে এরকম করা ঠিক হবে না’।

আলোচনায় শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই-একজন ছাড়া বেশিরভাগই এখনও ছাড়া পাননি।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো শ্রমিক যেন অন্যায়ভাবে মামলায় জড়িয়ে না পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে যেন মামলা দেয়া না হয়। এটা ঠিক হবে না, এটা আমরা চাই না। কিন্তু যে ঝামেলা করবে, যে ভাঙবে সেটা কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়।’

‘কখনও কখনও এমন বিশ্বাসযোগ্য ঘটনা ঘটেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরাতে আমরা দেখেছি, কোনো কারখানা নাই, কিচ্ছু নাই, সেখানেও কিছু লোক হঠাৎ করে গাড়ি ভাঙা শুরু করে দিল। তাদের ডাকা হলো, ধরা হলো; তাদের অনেকে শ্রমিকও না। হয় তারা শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে করছে শ্রমিকদের ইমেজ খারাপ করার জন্য অথবা শ্রমিকদের উসকে দেয়ার জন্য। এগুলোর বিষয়ে আমরা চাই, একটা ভালো মনিটরিং কমিটি হোক। আপনারা পাঁচজন থাকেন, সব সময় আমাকে সাহায্য করেন। আমি আপনাদের সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন, ‘বেতনের ব্যাপারে যেটা করা হয়েছে, আমাদের বিজিএমইএ যেন অত্যন্ত সতর্কভাবে সেটা ফলোআপ রাখে। শ্রমিক ও মালিক মিলে যা করা হয়েছে, সেটা আপনারা ঠিকভাবে পালন করবেন। যাতে কোথাও কোনো মালিক এর সুযোগ নিতে না পারে। একটা-দুইটা কারখানার জন্য আমাদের এতগুলো কারখানার ইমেজ নষ্ট করতে দেয়া ঠিক হবে না।’

শ্রমিকদের বেতন বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিদেশি ক্রেতারা সেই হারে পণ্যের বাড়তি মূল্য দিচ্ছে না উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, ‘সামনে বাড়বে কি না, জানি না। না বাড়ালে কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এই ব্যবসা আমরা করতে পারব না। ইফিসিয়েন্সি তো হঠাৎ করে বাড়বে না, বাড়ানোর জন্য তো চেষ্টা চলছে।’

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সভায় আরও কথা বলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম, সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ প্রমুখ।

পিডি/এমএমজেড/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।