বিক্রি বেড়েছে আইসক্রিমের
ক্রেতা খরা থেকে বেরিয়ে এসেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেয়া আইসক্রিমের স্টলগুলো। মেলায় দর্শনার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসক্রিমের বিক্রিও বেড়েছে। অথচ মেলার তিন ভাগের এক ভাগ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর গত সপ্তাহ পর্যন্ত ক্রেতা সংকটের ছিল আইসক্রিম বিক্রেতারা।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, ইগলু, লাভেলো, বেলিসিমো, পোলার, ব্লুপ স্টল নিয়ে আইসক্রিম বিক্রি করছে। এর পাশাপাশি ইগলু, পোলার আইসক্রিমের টোং দোকান দিয়ে বসেছেন বেস কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সব মিলিয়ে মেলায় অংশ নেয়া আইসক্রিমের স্টল সংখ্যা একশর কম হবে না।
আইসক্রিম বিক্রেতারা জানান, শীতের মৌসুম চললেও দুই-তিনদিন ধরে কিছুটা গরম পড়ছে। আর মেলা প্রাঙ্গণে বহু মানুষের পদচারণা থাকায় এখানে এক প্রকার গরমই দেখা যাচ্ছে। গরমের কারণে আইসক্রিমের প্রতি মানুষের চাহিদা কিছুটা হলেও বেড়েছে।
এক সপ্তাহ আগে এসব বিক্রেতারই জানিয়েছিলেন, শীতের সময় সাধারণত আইসক্রিমের চাহিদা কম থাকে। তবে এক শ্রেণির মানুষ আছেন যারা সব সময় আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন। এখন সে শ্রেণির মানুষগুলো আইসক্রিম কিনছেন। তবে গরম পড়লেই আইসক্রিমের বিক্রি বহুগুণ বেড়ে যাবে। তখন শিশু, বৃদ্ধ, যুবক সবাই আইসক্রিম খেতে চাইবেন।
মেলার ভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করে কিছুটা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে গেলেই চোখে পড়বে পোলার আইসক্রিমের স্টল। এ স্টলের বিক্রিয়কর্মী কাজী মোহাম্মদ বলেন, ‘এখন কিন্তু ক্রেতা সংকট নেই। দেখছেন তো পরিস্থিতি। পুরোটাই বদলে গেছে। এখন ক্রেতা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিছুটা গরম পড়ার কারণে আইসক্রিমের বিক্রি বহুগুণ বেড়ে গেছে। এছাড়া মেলায় তো আজ ক্রেতা-দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। আশা করছি সামনে বিক্রি আরও ভালো হবে। কারণ এখন দিন যত যাবে ততো গরম পড়বে।’
গত সপ্তাহেও এ বিক্রয়কর্মীকে স্টলে অলস সময় পার করতে দেখা যায়। সে সময় তিনি বলেন, ‘বিক্রি এখনো জমে উঠেনি। কারণ মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এখনো সেইভাবে আসেনি। আর কিছুদিন গেলে মেলা জমে উঠবে। তখন ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে। আর ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়লে আইসক্রিম বিক্রি কিছুটা হলেও বাড়বে।’
তৌফিক ফুড অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ মেলায় নিয়ে এসেছে লাভেলো আইসক্রিম। মেলার প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলেই আইসক্রিমটির স্টল দেখা যাবে। গত সপ্তাহে স্টলটিতেও বিক্রয় কর্মীদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। তবে শুক্রবার দেখা যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। স্টলটি ক্রেতায় পুরোপুরি ভরে না গেলেও বিক্রিয়কর্মীদের অলস সময় পার করার সুযোগ ছিল না।
স্টলের এক বিক্রয় কর্মী বলেন, ‘ভাই এখন আর গল্প করে সমায় কাটানোর সুযোগ নেই। কয়েকদিন ধরেই যথেষ্ট সংখ্যক ক্রেতা আসছেন। বিশেষ করে বিকেল ও সন্ধ্যায় আমরা ক্রেতাদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ ক্রেতার বেশি।’
ইগলু, বেলিসিমো, ব্লুপ আইসক্রিমের স্টলেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। একই অবস্থা দেখা গেছে টং দোকান দিয়ে বসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্টলে। ইগলুর আইসক্রিম নিয়ে ছোট স্টল দিয়ে বসা মো. অলি মিয়া বলেন, ‘খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে। এমন বিক্রি হলে কিছুদিনের মধেই খরচের টাকা উঠে যাবে। প্রথমদিকে বিক্রির যে অবস্থা ছিল তাতে তো চিন্তায় ছিলাম। কারণ এবার স্টল নিতে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়েছে। আবার প্রতিযোগীর সংখ্যাও এবার গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। তবে গতকাল ও আজ যে বিক্রি হয়েছে তাতে কিছুটা হলেও চিন্তা দূর হয়েছে। আশাকরছি সামনের দিনগুলোতে আরও ভালো বিক্রি হবে।
এমএএস/এএইচ/এমএস