মাছ-মুরগির দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:২৭ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও হঠাৎ করেই বেড়েছে মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি ছোট মুরগিও।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা কেজিতে। আর পাকিস্তানি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে খিলগাঁও ও মালিবাগ হাজীপাড়াতে।

এই বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আসলাম বলেন, হঠাৎ করেই বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি ১২৫ টাকা কেজিতে। সেই মুরগি এখন ১৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি গত সপ্তাহে ১৭০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৯৫ টাকায়। আর দেশি মুরগির মতো দেখতে পাকিস্তানি মুরগি ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, বেশ কিছুদিন মুরগির দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই মুরগির দাম বাড়তি। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পাকিস্তানি মুরগির দাম। যে হারে এই মুরগির দাম বাড়ছে তাতে হয়তো খুব শিগগিরই ৩০০ টাকা কেজি হয়ে যাবে।

খিলগাঁওয়ে ব্যবসায়ী কাউসার আলম বলেন, কয়েকদিন ধরেই সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তি। যে ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি।

মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস আগের মতোই ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৬৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর থাকাই বেশিরভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কোনো সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। সবজির পাশাপাশি ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, নতুন আলুর দাম।

তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। রুই মাছ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকায়। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি। শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে। চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।

গত সপ্তাহের মতো এখনও বাজারে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে করলা। বাজার ও মানভেদে করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগেও এ সবজিটির দাম একই ছিল। করলার পরেই রয়েছে লাউ। বাজার ও মান ভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

বর্তমানে বাজারে কম দামের সবজির তালিকায় রয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শালগম, বেগুন পেঁপে, শিম। কিছু কিছু বাজারে বিচিবিহীন শিম মাত্র ১০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিচিসহ শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে কোনো বাজারে শিমের কেজি ১৫ টাকার নিচে ছিল না।

মানভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। ফুলকপি ১০ থেকে ২০ পিস, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস, শালগম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং মূলা ১০ থেকে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা দাম কমার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো ও নতুন আলু। পাকা টমেটোর কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ২০ থেকে ৪০ টাকা। নতুন আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৫ থেকে ২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের। আগের সপ্তাহের মতো নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। সরিষা শাক ৫ থেকে ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের শীতের সবজি ভরপুর রয়েছে। যে কারণে সবজির দাম তুলনামূলক কম। শীতের সবজি শেষ হয়ে এলেই আবার সবজির দাম বেড়ে যাবে।

এমএএস/এনএফ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।