শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেয়ার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদান ও কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে শিল্প মালিকদের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, শ্রমিকরা যাতে ন্যায্য মজুরি এবং কাজের উপযুক্ত পরিবেশ পেতে পারে সেই ব্যবস্থার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা সবাই সচেতন। এ কাজে উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরাও সহায়তা করতে পারেন। দেশের শ্রমিকদের জন্য একটি সভ্য, সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ শিল্পপতিরা তৈরি করবেন, এটাই আমাদের আশা।
রোববার বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে তৈরি পোশাক শিল্প পণ্যের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শ্রম রফতানি করেই আমরা আমাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছি। একটি কাঁচা শ্রম আরেকটি প্রক্রিয়াজাত। শ্রম রফতানির বাজারগুলো ধরে রাখার জন্য আমাদের সরকার সব ধরনের সহায়তা অবশ্যই দিয়ে যাবে। এটা আমাদের দায়বদ্ধতা, জাতির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমাদের উলম্ফনের যে শুরু হয়েছে, সেটি জোরদার করতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের দরিদ্র পূর্ব পূরুষদের যে কষ্টের জীবন ছিল, লাঞ্ছিত, অসম্মানের জীবন ছিল, তার জায়গায় আমরা বিশ্বব্যাপী একটি উদীয়মান পরিবর্তনশীল, একটি উচ্চ আয়ে প্রবেশ উন্মুখ জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের ভাই বোনদের পরিশ্রমের ফলে।
মন্ত্রী বলেন, পোশাক খাতের শিল্পপণ্যের মান উন্নয়নে আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করবো। যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধান করা হবে। এই খাতের উন্নয়নে যেগুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেগুলোও দূর করতে হবে।
এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ যেসব জায়গায় হোঁচট খাওয়ার মত অবস্থা আছে, সেখানে আপনাদের সঙ্গে আমি আছি। বিষয়গুলো সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব দূর করার চেষ্টা করবো- যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধান করা হলে আমরা যে উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছি, সেগুলো আরও সহজ হবে। জনগণের উচ্চ জীবন মান নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা দারিদ্র্য দূর করতে চাই। বিশেষ করে দেশে বিদেশে নিম্ন আয়ের যেসব মানুষ কাজ করে তাদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, তৈরি পোশাক খাত রফতানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পোশাক খাতের অ্যাকসেসরিজ আগে আমদানি নির্ভর ছিল। রফতানি বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়তো। এখাতে পোশাক খাতের উপকরণের আমদানি নির্ভরতা কমিয়েছে। এখন রফতানিমুখী হয়েছে। ২০২১ সালে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সহায়তা করবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের নীতি সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য সুলতান মো. ইকবাল বলেন, বর্তমানের মত ভবিষ্যতেও দেশের গার্মেন্ট খাত ভালো করবে। কারণ এখানে নারী শ্রমিক পাওয়া অনেক সহজ। পোশাক খাতের অ্যাকসেসরিজ প্রতিষ্ঠানের রফতানির সম্ভাবনাও ভালো। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিদেশিরা আমাদের গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনকারীদের চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারছেন। অভিজ্ঞতা বিনিময় হচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েসন (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আব্দুর কাদের খানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রদশনী আয়োজন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মেয়াজ্জেম হোসেন মতিন।
এমএএস/জেএইচ/জেআইএম