ভোটের মাসে কম ছিল মূল্যস্ফীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ডিসেম্বরে দেশে মূল্যস্ফীতি কম ছিল। সেই সঙ্গে ভোটের মাসে কম ছিল চাল, ডাল, শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় দ্রব্যের দাম। তবে বাড়তি ছিল পরিধেয় বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা সেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণসহ বেশকিছু পণ্যের দাম।

মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনা করে বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্টের ভিত্তিতে এসব তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি বাড়েনি, এটাই বড় কথা।’

নির্বাচনের মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা ছিল উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও বাড়বে, এটা সন্দেহ ছিল। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়েনি। ডিসেম্বরে যে জিনিসটি বেশি প্রয়োজন হয়, দুধ ও চিনি। তবে সারা বিশ্বে ডিসেম্বরে চিনির দাম গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের দামও কম ছিল।’

ডিসেম্বরে পাম্প ওয়েল তেলের দাম কমেছে ১৮ শতাংশ, নির্বাচনের সময় বেশি প্রয়োজনীয় দুধের দাম কমেছে ১১ শতাংশ, চিনির দাম কমেছে ২১ শতাংশ বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

জাতীয় পর্যায়ে গ্রামীণ ও শহরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্টের ভিত্তিতে হয় ৫.৩৫ ভাগ, যা ওই বছরেরই নভেম্বরে ছিল শতকরা ৫.৩৭ ভাগ এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ছিল শতকরা ৫.৮৩ ভাগ। ডিসেম্বরে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপ-খাতে মূল্যস্ফীতি হয় যথাক্রমে শতকরা ৫.২৮ ও ৫.৪৫ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৫.২৯ ও ৫.৪৯ ভাগ।

গ্রামীণ পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বরে হয় শতকরা ৪.৯১ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল শতকরা ৪.৯১ ভাগ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপ-খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৪.৮৪ ও ৫.০৫ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৪.৮৪ ও ৫.০৬ ভাগ।

শহর পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬.১৪ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.২১ ভাগ। ডিসেম্বরে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপ-খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ৬.২৭ ও ৫.৯৯ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.৩২ ও ৬.০৯ ভাগ।

২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরের চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল শতকরা ৫.৫৫ ভাগ। একই সময়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল শতকরা ৫.৭০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ কমেছে।

গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে জাতীয় পর্যায়ের মজুরির হারও নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় পর্যায়ে মজুরির হার (সাধারণ) হয় ৬.১৮ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.২৬ ভাগ। কৃষি, শিল্প ও সেবা- এ তিন বৃহৎ খাতের মজুরি হার ডিসেম্বরে হয় যথাক্রমে ৬.২৬, ৬.০৩ ও ৬.৫২ ভাগ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.২৫, ৬.১০ ও ৬.৬৩ ভাগ।

প্রদীপ দাস/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।