বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তিন বছরে সর্বনিম্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০১৯

বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিতে ভাটা পড়েছে। কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমে গত বছরের নভেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমেছে ১৪ দশমিক শূন্য এক শতাংশে। এ হার ২০১৫ সালের নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওই সময় ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।

বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন, অবকাঠামো দুর্বলতা, সুদের উচ্চহার এবং গ্যাস-বিদ্যুৎতের সংকটসহ নানা কারণকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, নির্বাচনের বছরে ব্যাংকগুলোর ঋণে লাগাম টানতে গত বছরের জানুয়ারিতে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) ও সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়। এতে করে কমছে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম হচ্ছে, যার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে ঋণ প্রবাহ কম রয়েছে। বর্তমানে প্রধান কারণ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের কারণে বড় বড় উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে যায়নি, যার কারণে ঋণ প্রবাহ কমেছে। এ ছাড়া অবকাঠামো সমস্যা, সুদের উচ্চহার, গ্যাস-বিদ্যুৎতের সংকট, ব্যবসায়িক ব্যয় বাড়ানোসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ মন্দা রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন শেষ হয়েছে, এখন বিরোধীপক্ষ থেকে যদি কোনও অস্থির কর্মসূচি না আসে; রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকে, তাহলে আগামীতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর আগে গত আগস্ট শেষে প্রবৃদ্ধি নেমেছিল ১৪ দশমিক ৯৫ শতাংশে। আগের মাস জুলাইতে যা ছিল ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

এদিকে এক অংকে সুদহার নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারের কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে ব্যাংকগুলো, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডাবল ডিজিটে (১০ শতাংশের বেশি) ঋণের সুদ আদায় করছে দেশি-বিদেশি ২৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

২০১৮ সালের অক্টোবর মাস শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণের সুদহার ১০ শতাংশের বেশি আদায় করছে। ৩৬টি ব্যাংকের স্প্রেড ৪ শতাংশীয় পয়েন্টের উপরে রয়েছে। অক্টোবর শেষে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এর মধ্যে অনেক ব্যাংক এখনও স্প্রেড নিচ্ছে ৮ শতাংশের উপরে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কাঙ্ক্ষিত জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বাজারে মুদ্রা ও ঋণ সরবরাহ সম্পর্কে একটি আগাম ধারণা দিতে প্রতি ৬ মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এসআই/জেডএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।