ব্যাংকিং খাতে নজরদারির দুর্বলতা আছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘ব্যাংকিং খাতে সরকারের কিছু ওভার সাইড (নজরদারি) দুর্বলতা রয়েছে। এ কারণে আর্থিক খাতে সমস্যা হয়েছে। সরকার সব বাধা দূর করে প্রবৃদ্ধি অর্জন বাড়াতে চায়। তাই আগামীতে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী যেকোনো খাতকে ঢেলে সাজানো হবে বা সংস্কার করা হবে।’

রোববার (৯ ডিসেম্বর) শেরে বাংলানগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১০ বছরে ব্যাংক খাতের ১০টি বড় কেলেঙ্কারিতে লোপাট হয়েছে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এসব কেলেঙ্কারি ঘটেছে মূলত সরকারি ব্যাংকে। সোনালী ব্যাংকের হল-মার্ক গ্রুপ দিয়ে শুরু হলেও সবচেয়ে বেশি কেলেঙ্কারি ঘটেছে জনতা ব্যাংকে। আরও রয়েছে বেসিক ও ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গতকাল শনিবার এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত বিশ্বে সরকার পরিবর্তন হলেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেমে থাকে না কারণ তারা পূর্ববর্তী সরকারের কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। এক সরকারের কাজ অন্য সরকার ভালোভাবে বাস্তবায়ন করে।
কিন্তু আমাদের দেশে এর উল্টো হয়ে থাকে। আমাদের দেশের সংস্কৃতি অন্যরকম, তাই উন্নয়ন ধরে রাখতে আমাদের সরকারের ধারাবাহিকতা রাখা প্রয়োজন। তবে দিন দিন অনেক পরিবর্তন হয়ে আমাদেরও মন মানসিকতা উন্নত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনের আগের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও তার অনেকটা প্রমাণ বহন করে। সবগুলো রাজনৈতিক দল অত্যন্ত সুন্দরভাবে ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমরাও একদিন সেই উন্নত জায়গাতেই পৌঁছে যাব। সে পর্য্ন্ত আমাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যেতে হবে। তাই দেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাবাহিকতার জন্যই বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা জরুরি।’

এডিপি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে সর্বকালের সর্ববৃহৎ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা এ বছর এডিপি পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়নে স্বার্থক হব। ফলে জিডিপি ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩০ হবে। ২০২১ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ৩ বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ১০ ভাগের কাছাকাছি। আমরা যদি ১০ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি তাহলে উন্নয়নের হাত ধরে আমাদের দারিদ্র্যের হার অনেক কমে যাবে। শিক্ষার আরও উন্নতি হবে, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সব খাতেই বর্তমান সরকার উন্নয়নের রোল মডেল। দেশে এখন বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থানও বাড়বে। রেমিটেন্স প্রবাহ ১৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। সব খাতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখলে সব খাতে ভালোভাবে পৌঁছাতে পারব। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতেও উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৩০ সালে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা গেলে রেভিনিউ কালেকশন কলেবর বাড়তো। গত ১০ বছরে কর্মসংস্থান বেড়েছে, সামনে আরও বাড়বে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এবং এটি সৃষ্টি হবে শুধু ফরমাল খাতে। পাশাপাশি আমারা প্রতিষ্ঠা করছি ১০০টি স্পেশাল ইকনোমিক জোন। এগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের কর্মসংস্থান অত্যন্ত গতিশীল হবে, বিদেশি কর্মসংস্থান ব্যাপক হারে চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সেবা খাত অনেক বিকশিত, এ সেবা খাতের বা আইসিটি খাতের মাধ্যমে আরও অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারব। আমাদের আইসিটি খাতের শক্তিশালী ভিত্তি আমরা ইতোমধ্যে তৈরি করে ফেলেছি। আগামীতে এটি পূর্ণমাত্রায় বিকশিত হয়ে আরও বেশি গতিশীল হবে- যার মাধ্যমে অর্থনীতি আরও বেশি বেগবান হবে।’

এমইউএইচ/এনডিএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।