ব্যবসায় আফগানিস্তান-মিয়ানমারের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ০২ নভেম্বর ২০১৮

বিশ্বব্যাংক পরিচালিত ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ অর্থাৎ সহজে ব্যবসা করার সূচকে আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের চেয়েও পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের ওই র‍্যাংকিংয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬তম।

অন্যদিকে আফগানিস্তানের অবস্থান ১৬৭তম এবং মিয়ানমার আছে ১৭১-এ।

একটি দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসা চালু এবং সেটা পরিচালনা করা কতোটুকু সহজ বা কঠিন - সেই বিষয়গুলো কয়েকটি সূচকের আওতায় বিশ্বব্যাংক পরিমাপ করে।

একটি ব্যবসা শুরু থেকে পরিচালনা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ১০টি সূচকের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। সেগুলো হল: ব্যবসায় শুরু, নির্মাণের অনুমোদন নেয়ার প্রক্রিয়া, বিদ্যুতের সরবরাহ, সম্পত্তির নিবন্ধন, ক্রেডিট অর্জন, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তির বাস্তবায়ন ও অস্বচ্ছলতা দূরীকরণ।

বাংলাদেশের অবস্থান গত বছরের র্যাংকিং থেকে এক ধাপ উঠে এসেছে ঠিকই, তবে সাতটি সূচকে আগের চাইতে পিছিয়ে গেছে। এর জন্য বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ধীরগতিকে প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

আবার এই সূচকগুলোতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় উন্নয়নের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে আফগানিস্তান।

পাঁচটি ক্ষেত্রে রেকর্ড হারে সংস্কারের মাধ্যমে তারা নিজেদের এই অবস্থান পরিবর্তন করতে পেরেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।

যে সূচকগুলোতে পিছিয়েছে বাংলাদেশ

ব্যবসা শুরু: ব্যবসা শুরুর সূচকে গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ১৩৮ হলেও এবার সেটা ৭ পয়েন্ট কমে ১৩৮ এ দাঁড়িয়েছে। ব্যবসা শুরু করতে বাংলাদেশে গড়ে ১৯.৫ দিন সময় লাগে অন্যদিকে আফগানিস্তানে সময় লাগে মাত্র ৮ থেকে ৯ দিন। এবং মিয়ানমারে ১৪ দিন।

নির্মাণের অনুমোদন: নির্মাণের অনুমোদন পেতে বাংলাদেশের যেখানে ২৭৩.৫ দিনের চেয়ে বেশি সময় লাগে সেখানে আফগানিস্তানের সময় লাগে ১৯৯ দিন। অন্যদিকে মিয়ানমারের লাগে মাত্র ৯৫ দিন।

বিদ্যুৎ সংযোগ: বিদ্যুৎ সংযোগের সহজলভ্যতার দিকে বাংলাদেশ প্রতিবছর এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, তবে আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের তুলনায় এখনও অনেক পিছিয়ে। বাংলাদেশের স্কোর যেখানে ২২.৭৫ সেখানে আফগানিস্তানের স্কোর ৪৪.৫৮ এবং মিয়ানমারের স্কোর ৫২.৫২। কেননা বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে বাংলাদেশের এখনও ২২৩.৭ দিন লাগে। যেখানে আফগানিস্তানের ১১৪ দিন এবং মিয়ানমারের মাত্র ৭৭ দিনের প্রয়োজন হয়।

সম্পত্তি নিবন্ধন : সম্পত্তি নিবন্ধনে এখনও বাংলাদেশের সময় লাগে ২৭০.৮ দিন। যেখানে আফগানিস্তানের লাগে ২৫০ দিন, অন্যদিকে মিয়ানমারের লাগে ৮৫ দিন। তবে এই সূচকে গত বছরের তুলনায় এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

কর প্রদান : এই সূচকেও দুই দেশের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। কর দিতে আফগানিস্তানে বছরে ২৭৫ ঘণ্টা এবং মিয়ানমারে ২৮২ ঘণ্টা ব্যয় হয়। যেখানে বাংলাদেশে ব্যয় হয় বছরে ৪৩৫ ঘণ্টা। এই সূচকেও গত বছরের তুলনায় এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

বৈদেশিক বাণিজ্য : বৈদেশিক বাণিজ্যে আফগানিস্তানের স্কোর ৩০.৬৩% এবং বাংলাদেশের স্কোর ৩১.৭৬%। অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় আফগানিস্তানের অবস্থান এখানে এক শতাংশ কম। তবে মিয়ানমারে স্কোর এই সূচকে ৪৭.৬৭%। সীমান্তে রপ্তানিতে বাংলাদেশের সময় লাগে গড়ে ১৬৮ ঘণ্টা যেখানে আফগানিস্তানের লাগে ৪৮ ঘণ্টা এবং মিয়ানমারের লাগে ১৪২ ঘণ্টা।

চুক্তি বাস্তবায়ন : চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের স্কোর মাত্র ২২.২১। যেখানে আফগানিস্তান এগিয়ে আছে ৩১.৭৬ পয়েন্ট নিয়ে অন্যদিকে মিয়ানমারের স্কোর ২৪.৫৩। এছাড়া মিয়ানমার ও আফগানিস্তানের চাইতে এ খাতে বাংলাদেশের ব্যয়ের পরিমাণ অনেক বেশি।

অন্যান্য সূচক : সংখ্যালঘুদের বিনিয়োগ সুরক্ষার সূচকে গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ৮৯ হলেও এবার সেটা কমে ৭৬ এ দাঁড়িয়েছে। এদিকে আফগানিস্তান তাদের অস্বচ্ছলতা দূর করতে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। যেন দেশটির ক্রেডিট অ্যাক্সেসকে জোরদার করা যায়।

এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।