রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক দেয়ায় খুশি নন অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৩ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০১৮

দেশের অর্থনীতির আকারের তুলনায় বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি এমন মত খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের। এরপরও রাজনৈতিক বিবেচনায় আসছে আরও চার ব্যাংক। এসব ব্যাংক অনুমোদনে সুপারিশ করতে বাধ্য হয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে এসব ব্যাংকের অনুমোদনে খুশি নন বলেন মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলালের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এভাবে ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ায় আমি (ভেরি আনহ্যাপি) খুবই অখুশি। এসব ব্যাংক খুব সত্বর মার্জার (এককীভূত) শুরু হবে।

নতুন ব্যাংক দেয়ার কোনো দরকার ছিল না। তাহলে দেয়া হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পলিটিক্যাল গ্রাউন্ডে দেয়া হচ্ছে।

এর আগে একজন সাবেক মন্ত্রীকে ব্যাংক দেয়ার অভিজ্ঞতা ভালো নয় আবার একজন মন্ত্রীর আত্মীয় ব্যাংক পেতে যাচ্ছে এতে পুনরায় খারাপ অভিজ্ঞতা আসবে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেক মিনিস্টারই ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সংখ্যা বেশি হওয়ায় ব্যাংকগুলো একীভূত করা হবে। এজন্য আইন ঠিকঠাক করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় এলেই একীভূতের কাজ শুরু হবে। যদি অন্য কেউ আসে তাহলে তাদেরও ব্যাংক সংস্কারের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে যাব।’

এদিকে গত ২৪ অক্টোবর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বর্তমানে ভালো তবে ব্যাংকিং খাত খুব বেশি বড় হয়ে গেছে। অনেক ব্যাংক অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুটোই বেশি। এটা মনে হয় একটু সীমিতকরণ (কনসুলেশন) দরকার হতে পারে।

এদিকে শুরুতে আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক বিবেচনায় আরও চার ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সবুজ সংকেত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের শেষ সময়ে সায় পাওয়া চার ব্যাংক হলো- কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ, দ্য বেঙ্গল ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক এবং দ্য সিটিজেন ব্যাংক। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যদের মালিকানায় কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে বাকি তিন ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।

এর আগেও রাজনৈতিক বিবেচনায় ৯টি ব্যাংকের অনুমোদন দেয় শেখ হাসিনার নেতৃতাধীন মহাজোট সরকার। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ায় শুরু থেকেই সমালোচনা করে আসছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তবে সমালোচনা উপেক্ষা করে গত ২৯ অক্টোবর গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন চার ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, পর্ষদের সভায় চারটি ব্যাংকের প্রস্তাব তোলা হয়। একটি ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকি তিনটি শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের প্রস্তাব ও নথিপত্রে কিছু ঘাটতি ও ত্রুটি রয়েছে। সেগুলো সংশোধন করলেই অনুমোদন দেবে পর্ষদ।

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ চালুর প্রস্তাব করে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত মিলেছে। গত ২৯ অক্টোবর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এমইউএইচ/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।