২০১০’র ধসের অন্যতম কারণ প্লেসমেন্ট অরাজকতা : বালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮

দেশের শেয়ারবাজারে ঘটে যাওয়া ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসের পেছনের অন্যতম কারণ ‘প্রাইভেট প্লেসমেন্টে অরাজকতা’ বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা।

বৃহস্পতিবার রাজাধানীর একাত্তর হোটেলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক বালা বলেন, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের পেছনে প্রাইভেট প্লেসমেন্টে অরাজকতা অন্যতম কারণ। যদিও বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি বা কেউ বলেনি। তবে ওই সময় প্লেসমেন্টে শেয়ার বিক্রয় নিয়ে নানা অরাজকতা হয়। এমনও হয়েছে টাকা দিয়ে পরে প্লেসমেন্টের শেয়ার পাওয়া যায়নি এবং যে পরিমাণ দেয়ার কথা ছিল, তা দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে এখনো প্রাইমারি মার্কেট লাভজনক। এই মার্কেটে অবিশ্বাস্য ক্যাপিটাল গেইন করা যায়, যা একটি কোম্পানির লেনদেনের প্রথমদিনেই অর্জন করা যায়। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ৩ মাস সময় লাগে। তবে এটাকে কমিয়ে আনার জন্য কমিশন কাজ করছে।

অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক অভিজ্ঞতার অভাবে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু আনতে পারছে না বলে মনে করেন একসময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা স্বপন কুমার বালা।

তিনি বলেন, দেশে ৫৫-৬০টি মার্চেন্ট ব্যাংক বা ইস্যু ম্যানেজার থাকলেও হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে ইস্যু আনছে। প্রত্যেকটি মার্চেন্ট ব্যাংকের আইপিও’র জন্য ইস্যু জমা দেয়া বাধ্যতামূলক হলেও অনেকে তা করে না। অভিজ্ঞতার অভাবে ঘুরেফিরে কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক ইস্যু আনছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) দাবি নিয়ে কথা বলা শেয়ারহোল্ডারের মৌলিক অধিকার। যদি এটা সম্ভব না হয়, তাহলে শেয়ারহোল্ডারদের আদায় করে নিতে হবে। তাও না পারলে কমিশনে অভিযোগ করতে হবে। এর আলোকে কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যের ওপর কোম্পানির ভালো-মন্দ নির্ভর করে। তাই বিনিয়োগের আগে তাদের সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত। কারণ, উদ্যোক্তাদের অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে একটি গ্রুপের সবচেয়ে ভালো কোম্পানিটিও শেয়ারবাজারে এসে খারাপ হয়ে যায়। আর দুর্বল কোম্পানিগুলো ভালো হয়ে যায়।

বিএমবিএ সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশে প্রায় ৬০টি মার্চেন্ট ব্যাংক আছে। আর আরজেএসসিতে (যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক অফিস) প্রায় আড়াই লাখ কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন নেয়া আছে। কিন্তু তারপরও বছরে মাত্র ১০-১২টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসে। এ ক্ষেত্রে আবার একটি কোম্পানির শেয়ারবাজারে আসতে ৩-৪ বছর সময় লাগে।

লোভ ও আতঙ্ক থেকে বিনিয়োগকারীদের দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে বিএমবিএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, লোভ ও আতঙ্ক থেকে দূরে থাকতে পারলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা করতে পারবেন।

এমএএস/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।