সবজির দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০১৮
ফাইল ছবি

শীতের আগাম কয়েকটি সবজি বাজারে এসেছে বেশ আগেই, এরপরও রাজধানীতে কমেনি সবজির দাম। বরং সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব সবজিরই দাম বেড়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরসহ বিভিন্ন বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে সব থেকে বেশি বেড়েছে শিমের দাম। গত সপ্তাহে ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে আজ (৫ অক্টোবর) ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শিমের কেজি এক শ’ টাকার উপরে ছিল।

শিমের পাশাপাশি নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে টমোটো, ফুলকপি, শসা ও গাজর। বাজার ভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকা টমেটোর দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকার মতো।

টমেটোর মতো গাজরের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজার ও মানভেদে গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি।

একমাসের বেশি সময় ধরে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগাম সবজি ফুলকপি। তবে এ সবজিটির দাম এবার শুরু থেকেই অনেকটাই নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এ পরিস্থিতে সবজিটির দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫০-৬০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপির দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে।

বাজারে নতুন আসা শীতের আগাম আরেক সবজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা। শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা।

দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকা বেগুন, উস্তা, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, লাউও দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

বাজার ভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া উস্তার দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বরবটির দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এ সবজিটির কেজি ছিল ৫০-৬০ টাকা। কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়স, ধুনদল ও ঝিঙার দাম গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি। তবে এখন সব সবজির কেজি ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে।

গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউর দাম বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। তবে কিছুটা কমেছে পেঁপের দাম। আগের সপ্তাহে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই সবজিটির দাম কমে ১৫-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ ও বয়লার মুরগির দাম। বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।কাঁ চামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা পোয়া (২৫০ গ্রাম)। আর বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা কেজি।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. রবিউল বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি শিম বিক্রি করেছি ৮০ টাকা। এখন সেই শিম ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু শিম নয় বাজারে এখন সব সবজির দাম বেড়েছে। শীতের সবজি বাজারে পুরোপুরি না আসা পর্যন্ত দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আলী বলেন, শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, মুলা বাজারে পাওয়া গেলেও এখনও সেভাবে আসেনি। এ কারণে দাম চড়া। আর টমেটো ও গাজর যা পাওয়া যাচ্ছে তা আমদানি করা। দেশি টমেটো ও গাজর এখনও বাজারে আসেনি, ফলে দামও কমছে না।

এ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে ৪-৫টা সবজির দাম চড়া থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব অন্য সবজিতেও পড়বে। এ কারণেই এখন সব সবজির দাম চড়া। তবে বাজারে সবজির আমদানি (সরবরাহ বাড়া) হলে দাম এমনিই কমে যাবে।

রামপুরা বাজার থেকে সবজি কেনা মো. মামুন বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি বেগুন কিনেছিলাম ৪০ টাকা দিয়ে। এখন দাম চাচ্ছে ৫০ টাকা। শুধু বেগুন নয় এখন কোনো সবজি ৫০ টাকা কেজির নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ গত সপ্তাহেও পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙার কেজি ছিল ৪০ টাকা।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে শিমের দাম কিছুটা কমেছিল। ভেবেছিলাম সামনে আরও কমবে। কিন্তু এখন দেখি দাম আরও বেড়েছে। ১২০ টাকার নিচে শিম নেই। শিমের পাশাপাশি গাজর ও টমেটোর দামও ১০০ টাকার ওপরে। এমনকি শসার কেজি ৬০ টাকা। সব জিনিসের দাম এমন বাড়তি হলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের সবজি খাওয়াই ছেড়ে দিতে হবে।

এমএএস/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।