যুক্তরাষ্ট্রে মামলা : রিজার্ভ উদ্ধারের আশায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা দালিলিকভাবে প্রমাণিত। কারণ খোদ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত হ্যাকারদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আর এতেই আশায় বুক বাঁধছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এ মামলায় রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধার সহজ হবে।

মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরামর্শক দেব প্রসাদ দেবনাথ এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিএফআইইউ বলছে, এফবিআই লস এঞ্জেলস অফিসে ও ইউএস অ্যাটার্নি অফিসে ৬ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়য়ার নাগরিক প্রোগ্রামার পার্ক জিন জিউকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। পার্ক জিন জিউকের বিরুদ্ধে সনি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিরক্ষা ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

একই সঙ্গে ইউএস ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট পার্ক জিন ও তাকে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান চোসুন এক্সপো (SHOSUN EXPO) অবরোধ জারি করেছে।

উত্তর কোরিয়ার সরকারের সহায়তাকারী কোনো কোনো সাইবার হামলাকারীর বিরুদ্ধে এটাই প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিভিশনের অ্যাসিস্টেন্ট অ্যাটার্নি জেনারেল।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযোগকারীরা সংঘবদ্ধ চক্র যারা বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার হামলা করে।

এর আগে বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির তদন্তে রিজার্ভ চুরিতে হ্যাকিংয়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। যা গত ৫ জুলাই ফিলিপাইনের আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

হ্যাকারদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মামলা দায়ের ও সিআইডর তদন্ত প্রমাণ করে রিজার্ভ চুরি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হয়েছে। আর এসব পদক্ষেপ চুরিকৃত অর্থ উদ্ধার কার্যক্রমকে গতিশীল করবে। বাংলাদেশের দাবি আদায়ে আরও জোরালো ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ, ২০১৬ সালের ৪ ফেবরুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে মোট ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেরায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে ইতিমধ্যে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত এসেছে। আর ফিলিপাইনে চলে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ ডলার সে দেশের কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি অর্থ উদ্ধারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ফিলিপাইনের আইনি ব্যবস্থায় তা সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে।

বিএফআইইউ আরও বলছে, অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যুক্তরাষ্টের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিজের দায়ের করা অভিযোগ আইনি কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে। এতে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে। তবে আইনি ব্যবস্থাদি নিষ্পত্তিতে সময় লাগবে।

এসআই/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।