বেসিক ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ
বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ আউয়াল খান পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত বিষয়ের কথা উল্লেখ করছেন। গত ১৪ আগস্ট তিনি পদত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। যোগদানের ১০ মাসের মাথায় তিনি পদত্যাগ করলেন।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বলেন, এমডির পদত্যাগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে আগামী ৩০ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
আলোচিত বেসিক ব্যাংকের এমডির পদত্যাগের বিষয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঋণ অনুমোদন এবং কিছু ঋণ পুনঃতফসিলের মতো ব্যাংক ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পেরে আউয়াল খান পদত্যাগ করেছেন।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, সুদহার কমে যাওয়া, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে চলতি বছর বেসিক ব্যাংক ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকা লোকসান করবে- এমন পরিস্থিতি বুঝেই সমালোচনা এড়াতে তিনি আগেভাগে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেন।
মুহাম্মদ আউয়াল খান ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর বেসিক ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তাকে তিন বছরের জন্য এই পদে নিয়োগ দেয়। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত চার বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের লোকসান হয়েছে দুই হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটির ৬৮ শাখার মধ্যে ২১টি শাখাই লোকসান গুনছে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর আমলের চার বছরে বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে চার হাজার ৫০০ কোটি টাকা বের করে নেয়া হয়।
বর্তমানে ব্যাংকটির দেয়া ঋণের ৫৯ দশমিক ২২ শতাংশই খেলাপি। এখন তাদের মোট খেলাপি ঋণ ৮ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ তখনকার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বেনামে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে।
এটাকে ‘দিবালোকে ডাকাতি’ বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই ঘটনায় এমডিকে বরখাস্ত করে পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। পরে আলাউদ্দিন এ মজিদকে চেয়ারম্যান এবং খোন্দকার মো. ইকবালকে এমডি করে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়।
এমডি খোন্দকার মো. ইকবালের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। পরে ২৩ অক্টোবর আউয়াল খানকে এমডি পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
আউয়াল খান এর আগে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকেরও এমডি ছিলেন।
এসআই/এসআর/জেআইএম