ঝাঁজ বেড়েছে মরিচ-পেঁয়াজের, সবজি সস্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৮

রাজধানীর বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫ টাকা করে। আর মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-৩০ টাকা। তবে সবজির দাম তুলনামূলক সস্তাই রয়েছে। প্রায় সব সবজির কেজি ২৫-৪০ টাকার মধ্যে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গত সপ্তাহের মতো আজও (শুক্রবার) ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়তে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। আর ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ পেঁয়াজ মজুদ করা শুরু করেছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমছে। এ কারণে দামও বেড়েছে।

এদিকে কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়লেও অধিকাংশ সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, করলাসহ প্রায় সব সবজিতেই বাজার ভরপুর। এর সঙ্গে নতুন করে এসেছে বাঁধাকপি।

আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে। আর এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ১২০-১৩০ টাকা কেজি।

কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, বাজারে সরবরাহ কম। বৃষ্টিতে অনেক চাষির মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার যারা আগুড়ি (আগাম) চাষ করেছিলেন, তাদের অনেকের মরিচ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। এ কারণে কাঁচা মরিচের দাম বাড়তি।

এদিকে গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫-৩০ টাকা কেজি।

কারওয়ানবাজারে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. ইয়াসিন বলেন, গত সপ্তাহে এক পাল্লা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ১৭০-১৮০ টাকা। এখন বিক্রি করছি ২০০ টাকা। এর নিচে বিক্রি করার উপায় নেই।

media

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে হিসেবে এই ব্যবসায়ী বলেন, অনেক ব্যবসায়ীই এখন পেঁয়াজ মজুদে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ পেঁয়াজ মজুদের এখন উপযুক্ত সময়। এখন পেঁয়াজ মজুদ করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা নেই। মূলত মজুদের কারণেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটের দাম কিছুটা কমেছে। কারওয়ানবাজারে ভাল মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। রামপুরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে খিলগাঁও এবং মালিবাগের হাজীপাড়ায়।

টমেটোর মতো দাম কমার তালিকায় রয়েছে, চিচিঙ্গা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, কাঁকরোল, করলা, পেঁপে, বরবটিসহ প্রায় সব সবজিই। কারওয়ানবাজারে গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গার দাম কমে ২৫-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙা ও ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি, আর পটল ২৫-৩০ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স ও করলার দাম কমে হয়েছে কেজি ২৫-৩০ টাকা।

দাম কমার তালিকায় থাকা পেঁপের কেজি হয়েছে ২০-২৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা। আর কাকরলের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৩০-৩৫ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০-৪৫ টাকা কেজি। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। সেই সঙ্গে বাজারে নতুন আসা বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকা পিস।

সবজির দাম কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে শাকের দাম। লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাক আগের সপ্তাহের মতো ১০-১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। পুইশাক ও লাউ শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল হাসান বলেন, বাজার এখন সব ধরনেরর সবজিতে ভরপুর। কোনো সবজির কমতি নেই। পটল, কাঁকরোল, বরবটি আগে থেকেই বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এখন নতুন করে বাজারে এসেছে বাঁধাকপি। সবজির এমন সরবরাহ বাড়ার কারণেই দাম কমেছে।

রামপুরা ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি কাঁকরোল ৪৫ টাকায় বিক্রি করেছি। আর রোজার ভিতরে বিক্রি করেছি ৭০-৮০ টাকা কেজি। এখন সেই কাঁকরোল ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। পেঁপে বিক্রি করছি ২০ টাকা কেজি। অথচ রোজার ভিতরে এই পেঁপেরই দাম ছিল ৭০ টাকা কেজি। কাঁকরোল, পেঁপের মতো এখন বাজারে সব সবজির দাম কম।

তিনি বলেন, ঈদের পরের সপ্তাহে আড়তে সবজির সরবরাহ বেশ কম ছিল। কিন্তু গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে আড়তে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাল আসছে। আমরা পছন্দ মতো মাল কিনতে পারছি। কোনো কিছুর কমতি নেই। এমন পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কারণেই সবজি কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।

এমএএস/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।