১৭০ ফসলের তথ্যভান্ডার হচ্ছে
>> নতুন করে যোগ হচ্ছে স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফল ও হাইব্রিড ধান
>> বাদ দেয়া হবে নেশাজাতীয় ফসল চাষের তথ্য
>> মাঠপর্যায়ের কাজ শুরু করেছে বিবিএস
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির অবদান বরাবরই বেশি ছিল। আস্তে আস্তে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে শিল্প খাতের অবদান বাড়ছে। তবে কৃষির প্রকৃত অবদান নিয়ে মতভেদও রয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় কৃষি শুমারি বাস্তবমুখী করতে তথ্য সংগ্রহে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত ১৭০ ধরনের কৃষিপণ্যের সব ধরনের তথ্যভান্ডারও গড়ে উঠবে।
কৃষিপণ্যের তথ্যভান্ডার গড়ে উঠলে যে কেউ চাইলে এসব ফসলের তথ্য জেনে নিতে পারবেন। একই সঙ্গে কৃষিভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন সহজ ও বাস্তবসম্মত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বিবিএস সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে পঞ্চম কৃষি শুমারির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৩৩৮ কোটি ৯৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পও নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পেরও আওতায় কৃষির ১৭০ পণ্যের তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো. জাফর আহাম্মদ খান জাগো নিউজকে বলেন, ১০ বছর আগে কৃষি শুমারি হয়েছিল। ওই সময় ১২৭টি পণ্য নিয়ে কাজ করেছিল বিবিএস। কিন্তু এবার এ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এবার ১৭০টি পণ্য নিয়ে কাজ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে নতুন কিছু কৃষিপণ্য চাষাবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরি অন্যতম। এছাড়া কিছু পণ্যের তথ্য আগে ছিল না। যেমন- সূর্যমুখী তেল, হাইব্রিড ধান, কচু ও উস্তা। এবার এসব পণ্য যোগ করা হচ্ছে।
জাফর আহাম্মদ খান বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। সব তথ্য একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে যোগ হবে। ফলে মাঠপর্যায়ের তথ্য নির্ভুলভাবে উঠে আসবে।
জানা গেছে, জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্যবিষয়ক সংস্থা এফএও প্রণীত ধারণা পদ্ধতি অনুসরণ করে সদস্য দেশসমূহে পাঁচ বা ১০ বছর অন্তর কৃষি শুমারি পরিচালনা করা হয়। এজন্য ১০ বছরের মাথায় পঞ্চম কৃষি শুমারি পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ শুমারি পরিচালনা করতে দুই হাজার ৬০০ মাস্টার ট্রেইনার ও জোনাল কর্মকর্তা, ২৪ হাজার ৭০০ সুপারভাইজার এবং দেড় লাখ গণনাকারী কাজ করবেন।
এর মাধ্যমে সরকারের নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে কৃষি জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, কৃষক, শস্য উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদন এবং প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা প্রধানত কৃষি শুমারির মাধ্যমেই পাওয়া যাবে বলে জানান বিবিএস কর্মকর্তারা।
তারা আরও জানান, এর মাধ্যমে কৃষি খাতের উপ-খাতসমূহের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান, আন্তঃশুমারির সময়ে কৃষি খাতের বার্ষিক উৎপাদন প্রাক্কলন সম্প্রতি জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে নমুনা প্রণয়নে সহায়তা ও নির্ণয়, কৃষি উপ-খাতসমূহের সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র, মাঝারি, প্রান্তিক চাষী এবং পল্লী উন্নয়নে সরকারি কর্মসূচি গ্রহণে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ, প্রশাসনিক বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও মৌজা পর্যায়ে কৃষি উপ-খাতসমূহের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। পরবর্তীতে সবার জন্য এটি প্রকাশ করা হবে। এখন মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ শুমারির কার্যক্রম চলবে।
এমএ/এমএআর/এমআরএম/জেআইএম