ভারতীয় ঋণে নতুন বাস ক্রয়ের শর্ত শিথিল!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ০৭ জুলাই ২০১৮
ছবি-ফাইল

# বাস আনতে ডিপিপির ৪৫টি ধারা সংশোধন করা হয়েছে
# ৫৮০ কোটি টাকায় আনা হবে ৬০০টি বাস

ভারতীয় ঋণের টাকায় বাস বা যানবাহন ক্রয় করতে হবে সে দেশ থেকেই। এজন্য বাংলাদেশ সরকারের চাহিদা অনুসারে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রস্তুত করলেও তা সংশোধন করতে হয়েছে। কেননা মন্ত্রণালয়ের চাহিদার অনুসারে ভারতের কোনো কোম্পানি বাস তৈরি করে না। এজন্য ভারত যে ধরনের বাস প্রস্তুত করে সেটাই আনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। যদিও বাসের দামে কোনো হেরফের হচ্ছে না।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ‘বিআরটিসির জন্য দ্বিতল, একতলা এসি/নন এসি বাস সংগ্রহ (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্পের পিইসি সভা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রকল্পের্ মাধ্যমে ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ঋণের আওতায় ৬০০টি বাস আনা হবে। এর জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যার মধ্যে ৪৩৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা এলওসি বা ভারতীয় ঋণ।

সূত্র জানায়, বাসগুলো চূড়ান্ত করে ডিপিপি অনুসারে দরপত্রের কাগজপত্র ভারতীয় ঋণ সরবরাহকারী এক্সিম ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু এতে তারা রাজি হয়নি। পরবর্তীতে প্রস্তুতকৃত ডিপিপির শর্তের মধ্যে ৪৫টিতে আপস করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কেননা ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের চাহিদা ও শর্তানুরূপ বাস ভারতের কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করে না। ফলে এসব ধারার সংশোধন না করলে বাসগুলো সরবরাহের দরপত্রে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে না। ফলে দর কষাকষি করে এসব ধারা সংশোধন করতে বাধ্য হয় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সচিব নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রকল্পের কার্যাবিরণী নিয়ে সভা হয়। সভায় ৩০০টি দ্বিতল ও ১০০টি একতলা নন এসি বাসের দরপত্র অনুমোদন পায়। অবশিষ্ট ২০০টি একতলা এসি বাস কেনার লক্ষ্যে দরপত্রের ওপর ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক কোনো মতামত বা অনুমোদন দেয়নি। ফলে ২০০টি এসি বাস কেনার বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

সভায় বলা হয়, একাধিকার প্রকল্পের দরপত্র ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হলে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। এরপরও ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক, ভারতীয় হাইকমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং বিআরটিসি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি এক বৈঠক হয়।

বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, এমনভাবে ডিপিপিপ্রস্তুত করতে হবে যেন ভারতের বাস প্রস্তুতকারী সব প্রতিষ্ঠান এই দরপত্রে অংশ নিতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে ডিপিপির ৪০-৪৫টি জায়গায় পরিবর্তন আনা হয়।

ইআরডি সূত্র জানায়, প্রকল্পের শর্তে পরিবর্তন আসলেও দাম অপরিবর্তিত থাকছে। প্রকল্পের আওতায় ৩০০টি দ্বিতল বিশিষ্ট বাস আনা হবে, যার দাম ধরা হয়েছে প্রতিটি ৭২ লাখ টাকা করে। একতলা বিশিষ্ট বাসগুলোর দাম ধরা হয়েছে প্রতিটি ৬৯ লাখ টাকা, আর ১০০টি এসি বাসের দাম পড়বে প্রতিটি ৭০ লাখ টাকা করে। এসব বাসের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ১২ বছর হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বাস সরবরাহকারী কোম্পানি অশোক লেল্যান্ড।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় ঋণে আনা বাস ক্রয়ে কিছুটা জটিলতা ছিল, সেগুলো কেটে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৯ সাল নাগাদ ৩০০টি ডাবল ডেকার ও ২০০টি বাস আনা হবে। এগুলো আসলে রাজধানীতে গণপরিবহনের ঘাটতি কমে যাবে। তবে এসি বাসগুলো আসতে আরেকটু সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

এমএ/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।