এডিপি বাস্তবায়ন ১৭ বছরে সর্বোচ্চ
বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দ ব্যয়ে এবার রেকর্ড গড়েছে। গত ১৭ বছরের তুলনায় সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়ন সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসেছে। সদ্যসমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। এর আগে ২০১১-১২ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৯৩ শতাংশ করে এডিপির বরাদ্দ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছিল। ২০০১-০২ অর্থবছর থেকে হিসাবে গত বছর সব থেকে বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তৈরি করা এ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তা উপস্থাপন করা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভা শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন।
এইএমইডি জানায়, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে উন্নয়ন বরাদ্দের মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার ছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। তার আগের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাস্তবায়নের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এডিপি বাস্তবায়নের এ হারকে রেকর্ড জানিয়ে কামাল জানিয়েছেন, এত বেশি টাকা কোনো অর্থবছরই ব্যয় হয়নি। গত বছর সংশোধিত এডিপি মূল এডিপির চেয়ে খুব বেশি কমেনি। প্রায় কাছাকাছি ছিল।
তিনি বলেন, এ বছর থেকে মূল এডিপি ও সংশোধিত এডিপির মধ্যে পার্থক্য থাকবে না। এডিপি সংশোধন করা হবে না। কেননা আমরা আশা করছি পুরো এডিপিই বাস্তবায়ন সম্ভব।
গত কয়েক বছরের এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছর ব্যয় হয়েছিল এক লাখ সাত হাজার ৮৫ কোটি টাকা। শতাংশের দিক থেকে ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সেই তুলনায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল ৯৩ শতাংশ। এছাড়া ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির ৯১ শতাংশ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২ দশমিক ৭২ শতাংশ সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে।
এইএমইডি সূত্র জানায়, ২০০১-০২ অর্থবছরে বরাদ্দ মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৮৮ শতাংশ, এরপরের বছর ছিল ৯০ শতাংশ। ২০০২-০৩ অর্থবছরে কমে হয়েছিল ৮৯ শতাংশ, পরের দুই বছর দাঁড়ায় ৯২ শতাংশ ও ৯১ শতাংশ। সংশোধিত এডিপি ব্যয় কমে যায় ৮৩ শতাংশ। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটি আরও কমে দাঁড়ায় ৮২ শতাংশে। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে এই হার বাড়তে থাকে। ওই বছরে বাস্তবায়ন হয়েছে ৯১ শতাংশ। ২০১০-১১ তে দাঁড়ায় ৯২, পরের বছর ৯৩ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এই হার কিছুটা কমে যায়। পরের বছর ২ শতাংশ বাড়লেও ২০১৪-১৫তে আবার ৯৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। এরপরের দুই বছর যথাক্রমে ৯২ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ৮৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বাস্তবায়ন।
একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পরিকল্পনা সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম, আইএমইডির সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস উপস্থিত ছিলেন।
এমএ/বিএ