আজ অর্থ বিল, কাল বাজেট পাস : আসছে না বড় পরিবর্তন

মামুন আব্দুল্লাহ মামুন আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, ২৭ জুন ২০১৮

দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম (বাজেট) অধিবেশনে আজ (বুধবার) পাস হবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অর্থ বিল। আর বৃহস্পতিবার পাস হবে এই অর্থবছরের বাজেট।

বিকেল ৩টায় অধিবেশন শুরু হবে। এতে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিবেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও প্রধানমন্ত্রী সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, আজকের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু দিক নির্দেশনা ও সুপারিশ দেবেন প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে। সেই সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট পাসের পূর্ণ প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এর আগে গত ৭ জুন ‘সমৃদ্ধ আগামী পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ নাম দিয়ে আগামী অর্থ বছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটের বেশ কয়েকটি বিষয়ে ছোট খাট পরিবর্তনের বিষয়ে প্রস্তাবনা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক খাতের কর্পোরেট ও সবুজ শিল্প কর, আইসিটির ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার অন্যতম। এছাড়া বিনিয়োগ বাড়ানো ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বারুপ করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। পরে সে আলোকেই বাজেট পাস হবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী সচিবালয়ে সাংবাদিদের জানান, বাজেটে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হবে না। কিছু কিছু বিষয়ে কাজ করছি। এগুলো খুব বড় কিছু না।

তিনি বলেন, এটা এখন বাড়ানো হবে না, ভবিষ্যতেও বাড়ানো হবে না। কর্পোরেট ট্যাক্সে পরিবর্তন আনার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান।

মোবাইল বা ইন্টারনেটে ভ্যাট কমানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, মোবাইলে তো আমার প্রস্তাবই অত্যন্ত ভালো। আইসিটির বেশির ভাগ ট্যাক্সই ৫ শতাংশ। আর বাকি সব জিরো এই ধরনের। এ বিষয়ে আইসিটি তো খুব সন্তুষ্ট। তবে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমার একটা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আরও কিছু প্রস্তাব ছিল। এগুলো প্রায়ই আমরা সংশোধন করবো। এসব বিষয়ে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার খুবই খুশি। আমরা আশা করছি, যে আইসিটিতে আমরা ইয়াং জেনারেশনকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে পারবো।

এর আগে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ জানায়, বাজেট প্রণয়নের আগে বিজিএমইএর দাবি ছিল কর্পোরেট কর বিদ্যমান ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা। অথচ বাজেট বক্তৃতায় পোশাক খাতের কর্পোরেট কর ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং সুবজ শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ব্ষিয়ে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে চূড়ান্ত বাজেটে তা সংশোধন করার ব্যবস্থা করা হবে। আর আলোচনায় সেটা সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়।

উল্লেখ, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী বাজেটের আকার সংশোধিত বাজেট থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা বেশি।

বাজেটে ব্যয় মেটাতে সরকারি অনুদানসহ আয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। মোট ঘাটতি ১ লাখ ২১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে (এডিপি) ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ধরা হয় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। সরকারের অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা থেকে ঋণ ধরা হয়েছে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা আছে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।

উন্নয়ন বাজেটের মোট আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত অনুন্নয়ন বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা।

এমএ/এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।