ফিল্টারযুক্ত বিড়ির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ০৭ জুন ২০১৮

নতুন অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রস্তাবিত বাজেটে ফিল্টর সংযুক্ত ১০ ও ২০ শলাকার বিড়ির প্যাকেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবে ফিল্টার বিহীন বিড়ির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রস্তাব করেন। এ সময় ২০৩০ সালের মধ্যে বিড়ি এবং ২০৪০ সালের মধ্যে সিগারেটের উৎপাদন নিঃশেষ করার ঘোষণা দেন মুহিত।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হাতে তৈরি ফিল্টার সংযুক্ত ১০ শলাকার বিড়ির দাম ৭ টাকা ৫০ পয়সা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বর্তমানে এ বিড়ির দাম ৬ টাকা। আর ২০ শলাকার বিড়ির দাম ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে হাতে তৈরি ফিল্টার বিহীন বিড়ির দাম ৮ শলাকা ৪ টাকা, ১২ শলাকা ৬ টাকা এবং ২৫ শলাকা সাড়ে ১২ টাকা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সিগারেট শিল্প যেভাবেই হোক একটি উত্তম লাভের খাত হিসেবে শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। অধুনা ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আওতায় এ শিল্পের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে, কিন্তু তাও অন্তত আমাদের দেশে আরও ২০ বছরের বিষয়।

তিনি বলেন, তাই আমার মনে হয় তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগের সঙ্গে দেশীয় উচ্চমানের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম একসঙ্গে চলতে পারে। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমার কাজ ও কৌশল হচ্ছে (১) নিম্নমানের সিগারেট উৎপাদন দ্রুত বন্ধ করা (২) মূল্যসীমা নির্বিশেষে এক করহার নির্ধারণ ও (৩) একটি উন্নত দেশীয় ব্র্যান্ড অন্তত বিশ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠা করা।’

মুহিত বলেন, সেই লক্ষ্যে নিম্নমান স্তরের সিগারেট মূল্য আগামী বছরে ৩২ টাকা বা তদূর্ধ্ব হবে এবং সেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৫৫ শতাংশ। মধ্যম স্তরে ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৪৮ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। উচ্চস্তরে ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৭৫ টাকা ও ১০১ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ।

একইসঙ্গে আগামী দিনের লক্ষ্যমাত্রা হবে নিম্ন স্তর ৭৫ টাকায় উন্নীত করা, যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। তদূর্ধ্বে হয়তো তখন থাকবে একটি সুপিরিয়র স্তর, যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে উচ্চতর।

বিড়ির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিড়ির ভয়াবহতা সিগারেটের চেয়ে বেশি। বর্তমান আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ফলে বিড়ির ব্যবহারকারী কমে যাচ্ছে। বর্তমানে এ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যাও পূর্বের তুলনায় কম। গত বছর আমরা ঠিক করেছিলাম যে, বিড়ি উৎপাদন ২/৩ বছরের মধ্যে নিঃশেষ করা হবে।

তিনি বলেন, দেশ থেকে তামাক নিঃশেষ করার সীমানা প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিড়ির উৎপাদন ২০৩০ সালে এবং সিগারেটের উৎপাদন ২০৪০ সালে নিঃশেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এবার বিড়ির মূল্য বাড়ানো হবে না তবে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ক্ষেত্রে ২০ শলাকার প্যাকেটের মূল্য ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা করা হবে।

জর্দা ও গুলের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিড়ি-সিগারেটের মত ভয়াবহ আরেকটি পণ্য হলো জর্দা ও গুল। এগুলোর ব্যবহার সরাসরি হওয়ায় শরীরের ওপর এর বিরূপ প্রভাবও বেশি। তাই শুল্ক করের আপাতন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে জর্দা ও গুলের ওজনভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ করার সুপারিশ করছি। এক্ষেত্রে প্রতি দশ গ্রাম জর্দা ও গুলের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি ২৫ টাকা। যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ।

এমএএস/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।