ব্লু ইকোনমির সুরক্ষায় কোস্টগার্ড ডকইয়ার্ড হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৮ এএম, ২৯ মে ২০১৮

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় পর সমুদ্র এলাকার বিশাল আয়তন বেড়েছে। এই আয়তন ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার বা প্রায় আরেকটা বাংলাদেশের সমান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির অনেকাংশ সমুদ্র সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। এরই ধরাবাহিকতায় ব্লু ইকোনমিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছে। এই বিশাল সমুদ্রে সম্পদ আহরণে সুরক্ষার ও নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব কোস্টগার্ডের ওপর। কিন্তু এই নিরাপত্তা বিধানে যে পরিমাণ নৌযান দরকার, তার স্বল্পতা রয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যমান নৌযান রক্ষণাবেক্ষণ তথা নতুন নির্মাণে কোস্টগার্ডের নিজস্ব কোনো ডকইয়ার্ড নেই।

এই অবস্থায় কোস্টগার্ডের জন্য আলাদা ডকইয়ার্ড নির্মাণে ৪৪৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর তীরে কোস্টগার্ডের নিজস্ব জমিতে এটা স্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রদত্ত দুটি পুরনো জাহাজ দিয়ে এই বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে কোস্টগার্ড বাহিনীতে ১৩টি জাহাজ এবং ১০০টি বিভিন্ন ধরনের নৌযান রয়েছে। এছাড়া আরও দুটি অফসোর পেট্রোল ভেজেল, ৭টি ইনশোর পেট্রোল ভেসেল, ২২টি ফাস্ট পেট্রোল ভেসেল, ১টি ফ্লোস্টিং ক্রেন এবং ২টি টাগ বোট নির্মাণাধীন রয়েছে। এছাড়া কোস্টগার্ড বাহিনীর জন্য ১৬টি নৌযান নির্মাণের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু কোস্টগার্ড বহিনীর জাহাজ বা বোট সমূহ নির্মাণে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ডকইয়ার্ড নেই।

বর্তমানে নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড ব্যবহার করে নৌযান মেরামত ও সংস্কার করা হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে বছরে প্রায় ১০-১২ কোটি টাকা। একই সঙ্গে নৌবাহিনীতে নতুন জাহাজ ও সাবমেরিন যুক্ত করায় কোস্টগার্ডের জাহাজগুলোর রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য আলাদা ডকইয়ার্ড নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

এ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্লিট মেইনটেইন্যান্স ফ্যাসেলিটিস গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে এসেছে। প্রকল্পাটি আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০২১ সাল নাগাদ এ প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও গণপূর্ত অধিদফতর। পুরো টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে।

তবে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তবানা (ডিপিপি) তৈরির আগে এর একটি পূর্ণাঙ্গ ফিজিবিলিটি স্টাডি করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটি করা হয়নি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১০ তলা ভবনের অফিসার্স মেস নির্মাণ, ১১ তলা প্রশাসনিক ভবন, ৬ তলা সেইলরস ব্যারাক নির্মাণ, ২ তলা বিশিষ্ট ইউন্স হাউস নির্মাণ, ১০ তলা বিশিষ্ট সাপোর্ট ইউনিট ভবন নির্মাণ, ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ, ৪ তলা ক্যান্টিন স্থাপন ও ৬ তলা বিশিষ্ট জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার্স (জেসিও’স) ব্যারাক নির্মাণ করা হবে।

এর বাইরে ওয়্যার হাউজ নির্মাণ, ইয়ার্ড সার্ভিস নির্মাণ, ভূমি উন্নয়ন, ১৩টি যানবাহন, প্রতিরক্ষা বাধ নির্মাণ, পুকুর খনন, প্লাটুন, জেটি, প্যারেড গ্রাউন্ড আনুষঙ্গিক ভৌত অবকাঠামো সুবিধার সৃষ্টি করা হবে।

এ প্রসঙ্গে পরিকলল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ বলেন, কোস্টগার্ডের নিজস্ব রক্ষণাবেক্ষণ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দেশের বিশাল অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব হবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনে জন্য আগামী একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

এমএ/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।