আগামী বাজেটে কর্পোরেট করহার কমবে : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, কর্পোরেট করের হার কমানোর বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। এজন্য আগামী বাজেটে কর্পোরেট কর কমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। আসছে বাজেটে মাল্টিলেবেল ট্যাক্স বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ আসবে। এছাড়াও প্রবাসীদের দেশে বিনিযোগে উৎসাহিত করতে কিছু কর সুবিধা দেয়ার বিষয়েও ভাবা হচ্ছে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের উদ্যোগে এক প্রাকবাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে দুই স্তরের ভ্যাট ব্যবস্থা কার্যকরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশে তরুণ করদাতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথিউরিটি (বিডা) ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রস্তাব জামা দেয়ার সাত মাসের মধ্যে বিনিয়োগ সহায়তা প্রদান করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার খুব বেশি হয়ে গেছে। এটা সমন্বয় করতে হবে। তবে সময়ের অভাবে আগামী বাজেটের আগে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নিয়ে কিছু করা যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী বাজেটের পর সঞ্চয়পত্র সুদের হার রিভিউ করা হবে।
অর্থমন্ত্রী দেশের বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সুষম প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কমপিটিশন অ্যাক্ট’ জরুরি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ২৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠনের শেয়ার পুঁজিবাজারে না আসতে পারার বিষয়টি অত্যন্ত হতাশার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে যে রাজস্ব আদায় হয়, তার ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ীদের কাছ আসে। এটা অনেক কম, এই আদায়ের পরিমাণ ৮০ শতাংশ হওয়া উচিত। বড় বড় প্রকল্পের গুণগত মান ও দীর্ঘসূত্রিতা ও ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে কথা হচ্ছে। এ নিয়ে আমরা কিছু পদক্ষেপও নিয়েছি। আশা করছি আগামী বাজেটে আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ব্যাংক নিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, দেশে আগ্রাসী ব্যাংকিং হচ্ছে। অনেক সময় ব্যাংকের পরিচালকরা নিজেরাই মিলেমিশে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এটা একটা সমস্যা। ব্যাংকের পরিচালক ঋণ নিতে পারবে না। এটা করাও হলেও সমস্যা আছে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর, ব্যবসায়ী রূপালী চৌধুরী, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ম. তানিম, ডিসিসিসিআই সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমান, সিপিডির সিনিয়র রিচার্স ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান, আইডিএলডির সিইও আরিফ খান, বিআইডিএসর ড. নাজনীন আহমেদ প্রমুখ।
এমএ/বিএ/জেআইএম