খুচরা বিক্রেতাদের লাভের নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৩৭ পিএম, ০১ এপ্রিল ২০১৮

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেই পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারা একে অপরকে দোষারোপ করে থাকে। তবে এবার খুচরা বিক্রেতারা কত শতাংশ লাভ করতে পারবে সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে একটা নীতিমালা চাইল পাইকারি ব্যবসায়ীরা। খুচরা বিক্রেতাদের লাভ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে দেয়া হলে আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদার তুলনায় মজুদ অনেক বেশি থাকবে এবং ভোক্তারা এর প্রকৃত সুবিধা পাবেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।

আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে পর্যালোচনা সভায় এ দাবি জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা। রোববার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জহিরউদ্দিন আহমেদ, টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রি. জে. সালেহ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশাররফ হোসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব একরামুল হক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মফিকুল ইসলাম লস্কর, আমদানি ও রফতানি অধিদফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রক এ আর এম নজমুস ছাকিল, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মাওলাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গোলাম মাওলা বলেন, পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি পণ্যের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা পার্থক্য থাকে। তাই ভোক্তারা প্রকৃত সুফল পায় না। এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা নীতিমালা ঠিক করে দেয়া উচিত যে পাইকারি থেকে খুচরায় সর্বোচ্চ কত শতাংশ লাভ করতে পারবে। যদি এটা না করা যায় তবে দেখা যাবে আমরা একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকব। তিনি বলেন, আমরা যখন উৎপাদক বা আমদানিকারকদের নিকট পণ্য কিনব সেটার মেমো নিয়ে সে অনুযায়ী খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট পণ্য বিক্রি করব। আবার খুচরা বিক্রেতারা আমাদের নিকট থেকে পণ্য কেনার মেমো অনুযায়ী একট নিদির্ষ্ট পরিমাণ লাভ রেখে বিক্রি করবে। তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না।

পাইকারি ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, পাইকারি বাজারে আমরা সোয়াবিন তেল বিক্রি করি প্রতি লিটার ৮৫ টাকায়। খুচরা বাজারে সেটাই বিক্রি হয় ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। পামওয়েল পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ৬৩ টাকায়। খুচরা বাজারে সেটাই বিক্রি হয় ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়। অনুরুপভাবে আদা রসুন পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে চাহিদার তথ্য দেয়া হয় সেগুলো বহু আগের। তাই চাহিদার সমপরিমাণ মাল চলে আসলেও সরবরাহ ঠিক হয় না। তাই অনুরোধ করব এসব তথ্য যেন আরও আপডেট করা হয়।

এ বিষয়ে বৈঠকে মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, আগে পাইকারি দামের চেয়ে খুচরা বাজারে দামের পার্থক্য থাকত কেজিতে চার আনা। কিন্তু বর্তমানে পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ করে। এটা আমার মনে হয় যৌক্তিক হওয়া উচিত। বৈঠকের পর এক পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে মশুর ডাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৭৬ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে মশুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬৫ থেকে ১১৫ টাকায়। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা, খুচরা বাজারে সে ছোলাই বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা।

এমইউএইচ/ওআর/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।