ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৮

এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি করা ডিসেম্বর’ ১৭ প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বর’ ১৬ শেষে ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা।

তবে প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে।

সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের এ খাতে ঋণ খেলাপি ছিল ৮০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে তা নেমে এসেছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ৬ হাজার ৬ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিসেম্বর’ ১৭ শেষে রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে এক লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।

এছাড়া বেসরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। উচ্চ খেলাপি ঋণ সবাইকে ভোগাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ দেখা যায় না। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ প্রায় ১০ শতাংশে অবস্থান করছে। তবে খেলাপি ঋণের উচ্চ হার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কারণে।

এদিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

সম্প্রতি সংস্থাটি জানায়, ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এ সমস্যা দূর করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং কর্পোরেট গর্ভনেন্সের উন্নয়ন করতে হবে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ কমাতে আইনি সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করে সংস্থাটি।

এসআই/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।