তারল্য সঙ্কটে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। একের পর এক বড় দরপতন ঘটছে। রোববারের ধারাবাহিকতায় সোমবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই বড় দরপতন হলো।
বড় দরপতনের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। আগের কার্যদিবসের তুলনায় সোমবার ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও শেষ তিন কার্যদিবসে ডিএসইর লেনদেন ৩শ’ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি এ সময়ে ডিএসইতে ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কমানো হয়েছে। এর পাশাপাশি ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ উঠিয়ে নিতে চাপ দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে ব্যাংকের সুদহার কিছুটা বেড়ে গেছে। এসব কারণে শেয়ারবাজারে তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং একের পর এক বড় দরপতন হচ্ছে।
ডিএসইর সাবেক পরিচালক এবং মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুজিস্তা নূর-ই-নাহারিন (মুন্নি) জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যে কারণে বড় দরপতন হচ্ছে এবং লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে। আইসিবিকে বিনিয়োগ উঠিয়ে নেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। ফলে এখন বাজারে সাপোর্ট দেয়ার মতো প্রতিষ্ঠান নেই। আবার এডিআর কমানো হয়েছে। এসব কারণেই শেয়ারবাজারে তারল্য সঙ্কেট দেখা দিয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার মূল্য সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া মাত্র ৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭৩টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুটি মূল্য সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে।
বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বড়েছে ৬১ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ড্রাগন সোয়েটারের ৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল, অ্যাপেক্স ফুডস, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইউনিক হোটেল, ইফাদ অটোস, ফরচুন সুজ এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স ১৫১ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৬৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯১টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির।
এমএএস/এমআরএম/এমএস