অবৈধ মোটরসাইকেল আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দেশে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি ও বাজারজাত করার জন্য এসিআই লিমিটেডকে বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করেছেন আদালত। পুশ ইন্টারন্যাশনাল, নিউ সোনারগাঁ মোটরস, আরএন এন্টারপ্রাইজ, পোলারিস টেক লিমিটেড, পাওয়ারপ্যাক ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইয়ামাহা মোটরসাইকেল আমদানি ও বিপণনের ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে অবৈধ আমদানিকারকদের কাছ থেকে মোটরসাইকেল ক্রয়কারীরা রেজিস্ট্রেশন ও রোড পারমিটে সমস্যায় পড়বেন।

সম্প্রতি আদালতের এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জানা গেছে, অবৈধভাবে দেশে আসা মোটরসাইকেল নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আবার ক্রেতারা কেনার পর সার্ভিস নেবার সময়ে সঠিক সার্ভিসটি পাচ্ছে না। এমনকি প্রচলিত মডেল না হবার কারণে সঠিক যন্ত্রাংশও পাওয়া যায় না। বৈধ ডিলাররা তাদের সার্ভিস পয়েন্টে আসলে গাড়ির চেসিস ও ইঞ্জিন নাম্বার মিলিয়ে দেখে তারপর সার্ভিস দিয়ে থাকেন। বৈধ আমদানিকারকরা সঠিক মূল্য প্রদর্শন করে দেড়শ শতাংশের বেশি শুল্ক প্রদান করেন। কিন্তু অবৈধ আমদানিকারকরা কম মূল্য দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভোক্তাদের প্রতারিত করে। সম্প্রতি সময়ে এসিআই লিমিটেডের প্রচলিত মডেলের বাইরে এফজেডএস এফআই ভি ২.০ এবং ফেজার এফআই ভি ২.০ মডেলের মোটরসাইকেল দেশের বাজারে বিপণন করা হচ্ছে। এসব মডেলের মোটরসাইকেলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমদানি করছে, যারা বৈধ আমদানিকারক নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসিআই লিমিটেড আদালতে আবেদন করেন।

প্রতিষ্ঠানটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মেসার্স এসিআই মোটরস লিমিটেড কর্তৃক ইয়ামাহা মটর প্রাইভেট কোম্পানির তৈরিকৃত ইয়ামাহ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলে বৈধ আমদানিকারক এসিআই মটর লিমিটেড ব্যতীত সকল অবৈধ আমদানিকারক কর্তৃক আমদানিকৃত ইয়ামাহা মটরসাইকেল বাজারজাত, রেজিস্ট্রেশন, মেকার্স কোড ও টাইপ অনুমোদন বাতিল ঘোষণা করে আদালত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আদালতের এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএর করণীয় বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) মো. নূরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিআরটিএর সচিব মুহাম্মদ শওকত আলী বলেন, বিজ্ঞ আদালত এসিআই মোটর লিমিটেডকে দেশের একমাত্র বৈধ আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিআরটিএ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে। রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে কার্যকর পদেক্ষপ গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, অবৈধ মোটরসাইকেল আমদানির বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে সে বিষয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ অ্যাকশন নেবে। কেননা অবৈধ আমদানিকৃত মোটরসাইকেল দিয়ে অপরাধমূলক কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। আর পরবর্তীতে অপরাধমূলক কার্যক্রম হলে চিহ্নিত করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। এজন্য পুলিশ বাহিনী এ বিষয়ে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

জানা গেছে, আমদানিকৃত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হলে বিল আব অ্যান্ট্রি অ্যাসেসমেন্টে নোটিশ, গেট পাশ, সিকেডি অনুমোদন, কমার্সিয়াল অনুমোদন ও এলসি কপি সংযুক্ত করতে হয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন হলে এর পাশাপাশি ভোটার আইডি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ অথবা গ্যাস বিলের কপি। আমদানিকৃত মোটরসাইকেলে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে চেসিস নাম্বারসহ অনান্য বিষয়গুলো চেক করা হয়। এতে অনেক সময় অবৈধ আমদানিকারকরা ধরা পড়েন। এর বাইরে আসলে দেশে তা রাজস্ব বঞ্চিত ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এমএ/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।