মানুষকে কষ্ট না দিয়ে রাজস্ব বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৩ এএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮

মানুষকে কষ্ট না দিয়ে রাজস্ব বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও করজাল বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো হবে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, উন্নত দেশ ও প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশে কর জিডিপি অনুপাত অনেক কম উল্লেখ করে আগামী ২০২১ সালে তা ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান। স্বাগত বক্তৃতা রাখেন এনবিআর সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান।

রাজস্ব আহরণে অবদান ও চোরাচালান প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার জন্য অনুষ্ঠানে ১৪ জনকে কাস্টমস্ কর্মকর্তা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ ৬টি সংস্থাকে ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অফ মেরিট দেয়া হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে সরকারকে রাজস্ব আহরণ করতে হয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। প্রতিবেশ ভারতসহ উন্নত সব দেশে কর জিডিপির অনুপাত ২০ শতাংশের বেশি হলেও বাংলাদেশে তা মাত্র ১১ শতাংশ। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের কর জিডিপি অনুপাত ২০ শতাংশে নিয়ে আসা। এজন্য এনবিআরকে আরও বেশি গতিশীল হতে হবে। রাজস্ব বান্ধব সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমেই আহরণ বাড়াতে হবে। গত দুই বছরে আয়কর দাতার হার দ্বিগুণে উন্নীত হয়েছে, এটিকে আরো বাড়াতে হবে।

কাস্টমস দিবস নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত নিরাপদ রাখা ও আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজতর করতে কাস্টমস কাজ করে। কাস্টমসের কাজকে মানুষের সামনে উপস্থাপনের জন্য ওয়ার্ল্ড কাস্টমম অর্গানাইজেশনের সঙ্গে আমরা এ দিবসটি পালন করছি। একটা সময় কাস্টমসই আমাদের রাজস্ব আহরণের মূল উৎস হলেও আন্তর্জাতিক মুক্ত বাণিজ্যের কারণের তা থেকে সরে আসতে হয়েছে। এখন আয়কর ও ভ্যাট থেকে রাজস্বের বড় অংশ আহরণ হয়। ভবিষ্যতে শুল্ক থেকে রাজস্ব আহরণের নির্ভরতা কমিয়ে কাস্টমসকে অনাকাঙ্খিত দ্রব্য আমদানি রোধে ব্যবহার করতে হবে। অর্থপাচার রোধ ও অনাকাঙ্খিত পণ্য আমদানি বন্ধই হবে কাস্টমসের মূল কাজ। এছাড়া কাস্টমসকে সীমান্ত সুরক্ষাসহ নতুন নতুন কাজে যুক্ত করা হবে।

অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০২১ সালে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে চায় সরকার। এজন্য ব্যক্তিখাত ও ব্যবসায়ীদের সহায়তা প্রয়োজন। এনবিআরকে ব্যবসায়ীদের নিয়ে চলতে হবে। তাদের সহযোগিতায় পদক্ষেপ নিতে হবে।

ড. মশিউর রহমান বলেন, অর্থপাচার, সঠিক হিসাবে আমদানি-রপ্তানি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কাস্টমসকে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে হবে। যেখানে প্রণোদনা প্রয়োজন সেখানে দিতে হবে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের আচার-আচারণ, দৃষ্টিভঙ্গি শিল্পায়নের পক্ষে থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাদের ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন বন্ধ করে নয় বরং উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ায় পক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন ও কারখানা বন্ধ করে আইন প্রয়োগ করা যাবে না।

এমএ/জেএইচ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।