মেলায় কেনাকাটার ধুম
বাণিজ্য মেলায় এখন ধুমছে চলছে কেনাকাটা। আজ (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দর্শনার্থীর চেয়ে তুলনামূলক ক্রেতার সংখ্যা বেশি ছিল। আজ মেলার ২০তম দিন। প্রতিবারই মেলা পুরোপুরি জমে ওঠে এ সময়। শীতের তীব্রতাও তেমন নেই। ফলে বিপুল সংখ্যক ক্রেতার পদচারণায় মুখর বাণিজ্য মেলা। চলে কেনাকাটার ধুম।
সরেজমিন দেখা যায়, মেলার প্রায় প্রতিটি স্টলের বিক্রয়কর্মীরা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বেশি ভিড় দেখা যায় গৃহস্থালি পণ্য, মোবাইল ফোন, ব্লেজার ও কোটির স্টল আর খাবার দোকানে। তরুণীরা পছন্দের গহনা কিনতে ভিড় করেন গহনার স্টলগুলোতে।
প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থালি পণ্যের প্রতিষ্ঠান আরএফএল, বেস্টবাই, ইটালিয়ানো, বেঙ্গল হ্যাপিমার্ট, শরীফ মেলামাইনের স্টলে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। আরএফএলের বিক্রয়কর্মী জানান, যারাই আসছেন কিছু না কিছু পণ্য কিনে বের হচ্ছেন।
বাণিজ্য মেলা এখন শুধু কেনাকাটার জায়গা নয়, বিনোদনের স্থানও। সব বয়সের দর্শনার্থী মেলায় ভিড় জমাচ্ছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছেন কলেজপড়ুয়া তামান্না ইসলাম মীম। বলেন, ‘মেলার শেষদিকে বেশ গোছালো থাকে পরিবেশ। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ও হয় বেশ। মেলায় যদি ভিড় না হয় তাহলে ভালো লাগে না। আজ ছুটির দিনে মা, ছোট ভাইকে নিয়ে মেলায় চলে আসা।’
মা নাসিমা জামান বলেন, মেলার পরিবেশ খুব সুন্দর। বিশেষ করে প্যাভিলিয়নগুলো খুবই নান্দনিকভাবে সাজানো। এসএমই প্যাভিলিয়ন থেকে জামদানি শাড়ি ও মেয়ের জন্য একটি থ্রি-পিস কিনেছি।
মিরপুর থেকে এসেছেন মহসিনা বেগম। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আছেন তিনি। মেলা থেকে এক সেট মেলামাইনের বাটি কিনেছেন। বলেন, ছোট-বড় ১০টি বাটি আছে। একটু ছাড় আছে, দরকার ছিল বলে নিয়ে নিলাম। এছাড়া বিস্কুট, আচার ও বাচ্চাদের খেলনা সংগ্রহ করেছেন বলেও জানান তিনি।
মেলার অস্থায়ী শিশুপার্কে কথা হয় সাভার থেকে আসা সুজন আকনের সঙ্গে। তিনি এসেছেন পরিবার নিয়ে। বলেন, সাভার বাইপাইলে স্টেশনারি দোকান আছে। দোকান বন্ধ করে পরিবার নিয়ে এসেছি। এখানে শিশুপার্কের ব্যবস্থা থাকায় ভালোই হয়েছে। ছেলেকে এখানে বিভিন্ন রাইডে চড়াতে পারছি। স্ত্রীরও বহুদিনের শখ ছিল মেলায় আসার। তার শখও পূরণ হলো। ঘোরার পাশাপাশি কিছু গৃহস্থালি পণ্যও কেনা হলো।
হাসিব, ছাবিদ, নূর মোহাম্মদ জিম, ইমতিয়াজ ঘুরে ঘুরে সেলফি তুলছিলেন। ছাবিদ জানান, তারা রাজধানীর বিভিন্ন কলেজে পড়েন। মেলায় ঘুরতে আসবেন- আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। এখানে ঘুরতে এসে হাসিবের একটি ব্লেজার পছন্দ হয়। কিনেও নেয়। বেশ ভালো লাগছে মেলায় ঘুরে।
শীতের মধ্যেও আইসক্রিমের স্টলগুলোতে ভিড় ছিল বেশ। তরুণ-তরুণী ও শিশুদের ভিড় লেগে ছিল ইগলু, ব্লুপসহ বিভিন্ন আইসক্রিমের স্টলে।
প্রাণ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ঝটপট ফ্রোজেন ফুড মেলায় বিক্রি করছে গরম গরম নানা স্বাদের খাবার। খাবার খেতে মেলার পশ্চিম পাশে ফুড কোর্টের পাশে এর স্টলে ভিড় লেগেই আছে। এখানে প্যাকেটজাত দেশি পরোটা, শিঙাড়া, সমুচা, পুরি, চিকেন নাগেটস, অনথন, চিকেন পপকর্ন ও স্প্রিং রোলসহ হরেক রকমের খাবার পাওয়া যাচ্ছে।
পর্যটন ফুড প্যাভিলিয়নেও ভিড় লেগে থাকতে দেখা যায়। বাণিজ্য মেলার এসএমই ফাউন্ডেশনের ‘প্যাভিলিয়ন-আরপি ১’ সাজানো বাহারি পণ্যে দিয়ে। এ প্যাভিলিয়নে যারাই প্রবেশ করছেন তারা কিছু না কিছু কিনে বের হচ্ছেন। দেশি উদ্যোক্তাদের তৈরি সম্পূর্ণ দেশীয় এসব পণ্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণও বেশ।
এমএ/এমএআর/বিএ/জেআইএম