মোটরসাইকেল মার্কেটিংয়ে ভিন্ন মাত্রা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

দেশের মোটরসাইকেল মার্কেটে পরিবর্তন এসেছে। ২০১৭ সালে প্রায় চার লাখ ইউনিট মোটরসাইকেল বিক্রয় হয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ, এক হয়েছে বড় বড় মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো। গতবছর সবচেয়ে বড় যেই পরিবর্তনটি এসেছে তা হলো আফটার সেল সার্ভিস। এ ক্ষেত্রে ইয়ামাহাকে অন্যতম রোলমডেল বলা যেতে পারে, যারা বর্তমানে সারাদেশে ৩৮টিরও বেশি ৩-এস সেন্টার অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পরিচালিত করছে।

৩-এস সেন্টার হলো- সেলস, সার্ভিস এবং স্পেয়ার পার্টসের সমন্বয়। যদিও অতীতে মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো তাদের ডিলারশিপ দিত যাদের শো-রুম রয়েছে, কিন্তু এতে করে বাইকাররা কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের সেন্ট্রাল সার্ভিস সেন্টারে যেতে হত বা লোকাল ও দক্ষ প্রশিক্ষিত মেকানিকের মাধ্যমে সেবা নিতে হত, যা সাধারণত জেলা শহরগুলোতে হত। তবে ইয়ামাহা এবং হোন্ডা তাদের নিজস্ব কনসেপ্ট নিয়ে হাজির হয়েছে।

ইয়ামাহা কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা শুরু করেছে ৩-এস সেন্টার কনসেপ্ট। এটি তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়াবে। ইয়ামাহা শুধু ৩-এস ডিলারশিপ-ই দেয়নি সেই সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে মোটরসাইকেল সার্ভিসিংয়ের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

বর্তমানে মোটরসাইকেলের মার্কেটিং স্ট্রাটেজির ক্ষেত্রে যেসব বিষয়গুলোকে বিবেচনা করা হয় তা নিয়ে ইয়ামাহা বলছে, উদাহরণস্বরূপ ইয়ামাহার অন্যতম সেরা এবং বড় ডিলার ক্রিসেন্ট এন্টারপ্রাইজের কথাই ধরা যাক। যেটি বর্তমানে মিরপুরের ৬০ফিট এলাকায় অবস্থিত। ৩৭ হাজার বর্গফুটের এই শো-রুমে আসলে বাইকাররা একটি আদর্শ ৩-এস সেন্টারের পরিপূর্ণ ধারণা নিতে পারবে।

bike

৩-এস সেন্টার (সেলস, সার্ভিস এবং স্পেয়ার পার্টসের) বর্ণনা :

১. সেলস
মোটরসাইকেল ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় অংশ হচ্ছে সেলস। কোম্পানিকে জানতে হবে যে মার্কেটে যে সঠিক প্রোডাক্ট দিতে হবে এবং একই সময়ে খেয়াল রাখতে হবে যে কাস্টমার যাতে করে উন্নত প্রোডাক্ট পায়। তাই সেলস বাড়ানো লক্ষ্যে ইয়ামাহা ৩-এস সেন্টার ওপেন করেছে।

এই সেলস’এর আওতায় রয়েছে ডিসপ্লে এরিয়া, ডিসকাশন রুম, রিসিপশন ও স্টক জোন।

ডিসপ্লে এরিয়া : এই এরিয়াতে মোটরসাইকেল ডিসপ্লে করা হয়। ইয়ামাহা এই ডিসপ্লে এরিয়াতে তাদের মোটরসাইকেলের বিভিন্ন মডেল ও কালারসহ প্রদর্শন করে। এই এরিয়াতে বাইকারা বাইক গুলোর ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ পাবে। যাতে করে বাইকাররা বাইকটির প্রত্যেক পার্ট পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

ডিসকাশন রুম : প্রত্যেক ইয়ামাহা ৩-এস সেন্টারে একটি ডিসকাশন রুম রয়েছে। এখানে বাইকাররা তাদের পছন্দের বাইকের বিষয়ে শো- রুমের বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন। বিক্রয় প্রতিনিধি বাইকারের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক মোটরসাইকেলটি কেনার ব্যাপারে সহায়তা করেন।

রিসিপশন : এখানে বাইকাররা তাদের সেলস ফর্মালিটিস ও প্রয়োজনীয় সব কাগজ সংগ্রহ করতে পারবেন। বেশির ভাগ ইয়ামাহা ৩-এস সেন্টারে রিসিপশনিস্ট মেয়ে, যারা কাস্টমার সার্ভিসের ব্যাপারটি দেখাশোনা করেন।

স্টক জোন : এখানে বাইক স্টক করা থাকে। বাইকাররা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী মডেল পছন্দ করতে পারবেন। যদি কোনো ধরনের মডেলে পছন্দের সমস্যা হয় তবে কালার কম্বিনেশন পছন্দ করতে পারবেন।

২. সার্ভিস
বর্তমানে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ইয়ামাহা মোটরসাইকেল ফুয়েল ইঞ্জেক্ট। তাই এসিআই মোটরস দক্ষ ও প্রশিক্ষিত স্পেশাল ট্রেইনড মেকানিক নিয়োগ করেছে এফআই সার্ভিস দেয়ার জন্য এবং এফআইয়ের জন্য আলাদা টুলস ব্যবহার করা হয়।

এর আওতায় রয়েছে ডায়গনস্টিক টুলস, ওআইডিটি, ফুয়েল ইঞ্জেক্ট ক্লিনার, ওয়েটিং রুম।

bike

ডায়গনস্টিক টুলস : এই টুলসের মাধ্যমে ফুয়েল ইঞ্জেক্ট সিস্টেমের সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করা সম্ভব। এছাড়া এটি খুব অল্প সময় নিয়ে থাকে সমস্যা সমাধানের জন্য। এ পর্যন্ত অন্য কোনো কোম্পানির ৩-এস সেন্টারে এই ধরনের টুলস নেই।

ওআইডিটি : এই টুলস দিয়ে বাইকের যেকোনো সমস্যা সহজেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব। যদি কোনো সমস্যা ধরা পরে তবে যাতে করে খুব সহজেই সমস্যার সমাধান করা যায়।

ফুয়েল ইঞ্জেক্ট ক্লিনার : এই ক্লিনার হেল্প করবে ফুয়েল ইঞ্জেক্ট ক্লিন করার জন্য। এ সময়ে যেই সব বাইক লাইক আর-১৫, এফজেড-এস এবং ফিজার বাংলাদেশে আসছে সেগুলো ফুয়েল ইঞ্জেক্ট। আর খারাপ জ্বালানির জন্য প্রতি সময়ে ক্লিন করতে হয়।

ওয়েটিং রুম : যখন বাইকাররা বাইক সার্ভিসং করবেন তখন শিতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে অপেক্ষা করতে পারবেন, যা গ্লাস দ্বারা ঘেরা। এছাড়া সময় কাটানোর জন্য এখানে আছে ফ্রি ওয়াই-ফাই, ম্যাগাজিন ও নিউজপেপার পড়ার বাবস্থা।

৩. স্পেয়ার্স
সবশেষে আসে ৩-এসের শেষ পার্ট স্পেয়ার্স। এখানে সব স্পেয়ার্স পার্টস পাওয়া যাবে, যা এসিআই মোটরস ডিসট্রিবিউটর হিসেবে যেসব মোটরসাইকেল বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে তার সব পার্টস রয়েছে। সব অরিজিনাল পার্টস এবং পার্টসের দাম অলমোস্ট ফিক্সড।

ইয়ামাহা ৩-এস সেন্টারে কাস্টমার বাইক কিনতে পারবে যারা অথরাইজড ডিলার রয়েছে তাদের কাছ থেকে। আবার একই সঙ্গে সার্ভিস (ফ্রি সার্ভিস ও পেইড সার্ভিস) দুটি এক জায়গায় পাওয়া যাবে। এছাড়াও স্পেয়ার্স পার্টেসের ফিডব্যাকও পাওয়া যাবে সেখান থেকে।

জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।