এনআরবিসি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার আমানত তুলে নিল সরকার
ঋণ-সংক্রান্ত অনিয়ম ও বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতি ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক। আর এসব কারণে গত ৩ মাসে ব্যাংকটি থেকে পাঁচশ’ কোটি টাকার সরকারি আমানত তুলে নেয়া হয়েছে।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান তমাল এসএম পারভেজ ওই আমানত তুলে নেয়ার কথা জানান। এ সময় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কাজী মো. তালহা উপস্থিত ছিলেন।
এনআরবিসির চেয়ারম্যান বলেন, ইমেজ সঙ্কটের কারণে গত ৩ মাসে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাঁচশ’ কোটি টাকার সরকারি আমানত চলে গেছে। তবে সম্প্রতি সামান্য কিছু ইমেজ সঙ্কট তৈরি হয়, যার ফলে পাঁচশ’ কোটি টাকার মতো সরকারি আমানত চলে যাওয়ার পরও জনগণের আমানত কমেনি। বর্তমানে আমাদের আমানত রয়েছে চার হাজার সাতশ’ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্যে আমাদের এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল আমরা শিগগিরই সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করব। বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসব। নতুন ব্যাংকগুলোর মধ্যে আমরাই প্রথম ১৯ সালের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ আনব। এছাড়া শিগগিরই প্রবাসীদের জন্য নতুন সেবা তৈরি করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তমাল এসএম পারভেজ বলেন, পরিচালকদের সরাসরি নেয়া ঋণের একশ কোটি টাকা ফেরত এসেছে। এ কারণেই আমেদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। যাদের ঋণ দেয়া হয়েছিল তারা ভালো প্রতিষ্ঠান। নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছে। আমাদের ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ দুই শতাংশের কম।
আগামী ছয় মাসে পরিচালকদের সরাসরি নেয়া ঋণের আরো দেড়শ’ কোটি টাকা ফেরত আনা হবে। আর ২০১৯ সালের পর পরিচালকদের কোনো ঋণ থাকবে না বলে তিনি জানান।
বর্তমানে ব্যাংকের ৫৭ জন শেয়ারহোল্ডর আছেন উল্লেখ করে এনআরবিসির চেয়ারম্যান বলেন, এখানে বেনামে কেউ নেই। আমাদের স্পন্সর শেয়ারহোল্ডাররা বিদেশ থেকে আমানত এনেছেন। আমি নিজেও আমানত আনছি। আমরা এখনও জনগণের আস্থা হারায়নি।
প্রসঙ্গত, অনিয়ম ও দুর্নীতির ১০টি গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নতুন প্রজন্মের এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরেই ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন। পরিচালনা পর্ষদের সব কমিটি নতুনভাবে গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলীকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তমাল এসএম পারভেজকে।
এসআই/জেডএ/আইআই