ক্রেতা-বিক্রেতা-উদ্যোক্তার মিলনমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশসহ ২৩টি দেশের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার গতকাল ছিল দশম দিন। ইতোমধ্যে ক্রেতা-দর্শনার্থী-বিক্রেতা আর উদ্যোক্তার মিলন মেলায় পরিণত হয়েছি এটি। কেউ আসছেন পণ্য কিনতে কেউবা দেখতে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের মেলবন্ধন তৈরি করছে এ মেলা।

মেলায় ঘুরতে এসেছেন নতুন দম্পতি আফরোজা ও সাঈদ খান। তারা বলেন, গেলো বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের বিয়ে হয়েছে। এবারই দুজন একসঙ্গে মেলায় আসা। ফার্নিচার কিনবো বলে ঘুরে দেখছি। পছন্দ, দাম ও মান সবকিছু এক হলে অর্ডার করবো। এছাড়া টুকটাক প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনবো।

মেলা থেকে কেনো কিনবেন- জানতে চাইলে আফরোজা বলেন, মেলায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য একসঙ্গে পাওয়া যায়। বিশেষ ছাড়ও থাকে। এছাড়া মেলায় ঘুরতেও ভালো লাগে। সব মিলিয়ে মেলায় আসা।

একসঙ্গে মেলায় এসেছেন চার বন্ধু জাহিদ, আসাদ, রাজিব ও রিপন। জাহিদ বলেন, প্রতি বছরই বাণিজ্য মেলায় ঘুরতে আসি। এবারও ঘুরতে আসা। ঘোরার ফাঁকে কিছু কেনাকাটা হচ্ছে। প্রচন্ড শীতের কারণে একটি ব্লেজার কিনলাম। রিপন প্যান্ট কিনেছে।

fair

‘ঘুরছি, পছন্দ হলে আরো কিনবো। আমরা সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকি। মেলা উপলক্ষে এক হওয়া। এবারের মেলার পরিবেশ বেশ ভালো। ঘুরছি, আনন্দ করছি, কেনাকাটা করছি- বেশ ভালোই সময় কাটছে’- যোগ করেন তারা।

সুমন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু ঘোরাঘুরি আর কেনাকাটা নয়, অনেকে এসেছেন ব্যবসায়িক কাজে। আমার ছোট একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। বিভিন্ন হস্তশিল্পের পণ্য বিক্রি করি। মেলায় এ ধরনের অনেক পণ্য উঠেছে। দেখতে এসেছি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবো। পছন্দ হলে পণ্য অর্ডারও করবো।

মেলায় আসা দর্শনার্থী মোহাম্মদ আসাদ বলেন, এক বছর পরপর মেলা হয়। এ মেলার জন্যই সারা বছর অপেক্ষা করি। রাজধানীতে এতো বড় একটি আয়োজন না আসলে কি হয়? কেনাকাটাও করেছি। মেলা উপলক্ষে মূল্যছাড় দিয়েছে তাই ‘ফিট এলিগেন্স’ থেকে একটি ব্লেজার কেনা হয়েছে।

মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা কেমন লাগছে- জানতে চাইলে বলেন, এবারের মেলার পরিবেশ বেশ সুন্দর। দেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর পাশাপাশি এখানে অনেক বিদেশিরাও আসেন। তাই এটি আরো পরিপাটি ও গোছানো হওয়া উচিত। এখনে বিদেশি পণ্যের নামে নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে। খাবার হোটেলগুলোতে নানা অব্যবস্থপনা রয়েছে। এখনো স্টলের কাজ চলছে। কর্তৃপক্ষ একটু সতর্ক হলে এসব বিষয় এড়ানো সম্ভব।

fair

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা দর্শনার্থী আসমা আক্তার বলেন, কিছু গৃহস্থালি পণ্য কেনার উদ্দেশ্যে মেলায় আসা। এখানে অনেক স্টল থাকে। নতুন নতুন পণ্য পাওয়া যায়। কিন্তু স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে যেটা বুঝলাম, সচরাচর মূল্যই রাখা হচ্ছে। যেটুকু ছাড় দেয়া হচ্ছে তাও সামান্য।
‘কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছি। ঘুরে দেখছি, পছন্দ হলে আরো কিনবো’- যোগ করেন তিনি।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ব্যবসায়ী জাবেদ ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, নতুন বাড়ি করছি। সেখানে দরজা ও টাইলস লাগবে। আমার এক ব্যবসায়িক পার্টনার বললেন, চলো মেলা থেকে ঘুরে আসি। এখানে এসে নামিদামি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছি। মেলায় একসঙ্গে সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য পেয়ে সুবিধা হচ্ছে যাচাই-বাছাই করে পণ্য কিনতে। আরো একটু দেখবো, পরে অর্ডার দেবো।

সপরিবারে মেলায় আসা জামাল আহমেদ বলেন, বাচ্চাদের আবদার তারা মেলা ঘুরে দেখবে। এ কারণে আসা। এবারের মেলার পরিবেশ খুবই সুন্দর। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য। কেনাকাটার পাশাপাশি ভালো বিনোদনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাচ্চাদের শিশু পার্কে নিয়ে আসলাম। তারা ট্রেন, হেলিকপ্টারে চড়েছে। বেজায় খুশি, আমরাও খুশি।

এসআই/এমএআর/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।