মেলায় নকশি কাঁথার মাঠ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

নকশি কাঁথার সঙ্গে বাঙালির সত্তার সম্পর্ক। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও বাঙালিয়ানার অপর নাম এটি। আজকাল নকশি কাঁথা খুব একটা চোখে পড়ে না। পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের সেই ‘নকশি কাঁথার মাঠ’ খুঁজে পাওয়া যাবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। মেলায় স্থাপিত এসএমই প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে হাতে তৈরি বাহারি নকশি কাঁথা। প্যাভিলিয়নের ভেতরে ১৫ নম্বর স্টল ‘রাজশাহী নকশি ঘর’-এ মিলছে এর সমাহার।

স্টলে গ্রাম বাংলার সবই পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে নকশি কাঁথা। নারীদের সুনিপুণ হাতে তৈরি এসব কাঁথা দেখতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা ছাড়াও যশোর, কুষ্টিয়া, মাগুরা ও জামালপুর থেকে আনা কাঁথা রয়েছে এ স্টলে।

পাতলা কাপড় থরে থরে সাজিয়ে সেলাই করে এ কাঁথা তৈরি হয়। কাপড় বোনার সুতা দিয়ে এতে নকশা করা হয়। হাতের নৈপুণ্যে এতে বিচিত্র রঙের নকশা, তরঙ্গ ও গল্পের প্রকাশ ঘটে। এজন্য এর নাম নকশি কাঁথা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব কাঁথা। সৌখিন নারীদের এসব কাঁথার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা আছে। এক কাঁথার সঙ্গে অন্য কাঁথার মিল পাওয়াও কঠিন। ডিজাইনের ভিন্নতা, অনেকটা জামদানি শাড়ির মতো।

বিক্রেতারা বলছেন, এখানে এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে চার হাজার টাকা মূল্যের নকশি কাঁথা রয়েছে। এছাড়া হাতের কাজের বিভিন্ন থ্রি পিস, ওয়ালমেটও রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী নকশি ঘরের স্বত্বাধিকারী পারভীন আক্তার বলেন, এখানে প্রদর্শন করা নকশি কাঁথা সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন রঙ ও নকশায় সাজানো হয়েছে এসব কাঁথা। তবে কাঁথা ছাড়াও এ স্টলে রয়েছে কুশন কাভার, বেডশিট ও হাতের কাজের থ্রি-পিস।

তিনি বলেন, নারীদের হাতের নৈপুণ্যে এসব কাঁথায় ফুটে উঠেছে বিচিত্র রঙের নকশা, বর্ণিল তরঙ্গ ও গল্প-কাহিনী। প্রিয়জনকে উপহার দিতে এর কদরও বেশ।

মূলত গ্রামের নারীরা অবসরে নকশি কাঁথা সেলাই করেন। একটি কাঁথা সেলাই করতে এক বছর কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যায়। এছাড়া আগের দিনে নতুন জামাই বা নাত-বউকে উপহার দেয়ার জন্য বয়স্ক নারীরা নকশি কাঁথা সেলাই করতেন।

এখন সেই নকশি কাঁথা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য তৈরি হচ্ছে। ক্রেতাদের কাছেও এর বেশ কদর। বাংলাদেশ ছাড়াও অনেক দেশের মানুষ, বিশেষ করে প্রবাসীরা দেশীয় তৈরি এ পণ্যের প্রতি আগ্রহ দেখান বেশি- বলেন পারভীন আক্তার।

মেলায় সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে একটি কাঁথা সংগ্রহ করেছেন সোমাইয়া জাহান। বলেন, মেলায় আনা কাঁথাগুলো খুবই সুন্দর। দেখে পছন্দ হলো বলে সংগ্রহ করলাম। নাতিকে গিফট দেবো। এর বাইরে ওয়ালমেট ও কুশন নিয়েছি। এগুলোর মানও ভাল। দামও নাগালের মধ্যে।

এমএ/এমএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।