শীতের প্রভাব মেলায়

মামুন আব্দুল্লাহ মামুন আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০১৮

নেই কোনো রাজনৈতিক উত্তাপ, শঙ্কাও নেই। এবারের বাণিজ্য মেলা তাই প্রথম দিন থেকে জমজমাট হবে- এমন আশায় ছিলেন স্টল ও প্যাভিলিয়ন মালিকরা। হচ্ছিলও তাই। কিন্তু বাগড়া বাধিয়েছে তীব্র শৈতপ্রবাহ। সারাদেশের মতো রাজধানী ঢাকাও শীতে তটস্থ। এমন অসহনীয় শীতল পরশ, বাইরে টিকে থাকাই যেন দায়।

তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। গত শুক্র ও শনিবার মেলা জমে উঠলেও গত দুদিন দর্শনার্থীদের খরা দেখা দিয়েছে। সন্ধ্যা নামতেই মেলার প্রাঙ্গণ ফাঁকা। চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্টল ও প্যাভিলিয়ন মালিকসহ মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কপালে।

গতকাল ছিল মেলার অষ্টমদিন। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থী তেমন প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। মেলার প্রাঙ্গণ প্রায় ফাঁকা দেখা যায়। দিনের উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও সন্ধ্যা নামতেই যেন খাঁ খাঁ প্রান্ত।

তৃণমূল কারুপণ্যের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা কামাল বলেন, দিনের শুরুতে কোনো বেচাবিক্রি থাকে না। বিকাল নাগাদ কিছুটা বিক্রি হয়। কিন্তু গত দু’দিন বিকাল থেকেই ফাঁকা হতে থাকে মেলার প্রাঙ্গণ। তীব্র শীতের কারণে সবাই বাড়ি চলে যাচ্ছেন। ক্রেতা না থাকায় আমাদের কোনো ব্যবসাই হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরাও বাড়ি চলে যাচ্ছি।

একই সুর কুষ্টিয়া হস্তশিল্প স্টলের সেলসম্যান হালিমা বেগমের। বলেন, শীতের কারণে মেলায় দর্শনার্থী নেই, বেচাবিক্রিও নেই। যা আছে তা নামমাত্র। প্রতিদিনের খরচই উঠছে না।

দুপুর ১২টার দিকে মেলা প্রাঙ্গণে উপস্থিত দুই বন্ধু রবিন ও আরিফের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, কলেজ ফাঁকি দিয়ে মেলায় আসা। একটু ঘোরাঘুরি করবো কিন্তু কনকনে শীতল হাওয়ায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। তাই চলে যাচ্ছি।

এবারের মেলায় সবচেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন আইসক্রিম বিক্রেতারা। তারা বলছেন, যে শীত তাতে মানুষ আইসক্রিম খাওয়ার চিন্তাই করছেন না। ফলে বিক্রিও নেই।

গোল্ডেন সার্ভেস্টের ব্লুপ আইসক্রিমের স্টল গিয়ে দেখা যায় বিক্রয়কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। একই অবস্থা ইগলুর আইসক্রিম নিয়ে ছোট স্টল দিয়ে বসা মো. অলি মিয়ার। তিনি বলেন, আমার মতো আটজন আইসক্রিমের ছোট স্টল দিয়েছেন। স্টল নিতে মোট খরচ হয়েছে নয় লাখ টাকা। আগে মেলার বাইরে ভ্যানে ইগলুর আইসক্রিম বিক্রি করতাম। বেশ ভালো বিক্রি ছিল। কিন্তু এবার টাকা খরচ করে স্টল নিয়ে ধরা খেয়েছি। কোনো বিক্রি নেই। আর যে শীত পড়েছে তাতে আর বিক্রি হবে কিনা- তাও বলা যাচ্ছে না।

মেলার ইজারাদার মীর শহিদুল আলম জানান, গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় লোকসমাগম ছিল বেশ। গত দু’দিন তী্ব্র শীতের কারণে মেলায় কোনো দর্শনার্থীর দেখা মিলছে না। আশা করছি, শৈতপ্রবাহ চলে গেলে আগের রূপে ফিরে আসবে বাণিজ্য মেলা।

এমএ/এমএআর/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।