বাণিজ্য মেলায় এবার বাড়তি নিরাপত্তা

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ২১তম বাণিজ্য মেলা। এতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ। এবারের মেলায় থাকছে ৫১৪টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। সুষ্ঠুভাবে এ মেলা সম্পন্ন করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সার্বিক নিরাপত্ত নিশ্চিতে ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। মেলা ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে দেড় শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অন্যবারের মতো এবারের মেলায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশ, র্যাব ও আনসারসহ পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

সংশ্লিষ্ট এলাকার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মেলাকে কেন্দ্র করে এবার বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হবে। এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে খোলা মাঠে আয়োজিত এ মেলার সার্বিক দায়িত্বে আছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৬টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা হয়েছে ১৮টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, আটটি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৭টি প্যাভিলিয়ন। মেলায় ১৩ ক্যাটাগরিতে থাকছে সাধারণ প্যাভিলিয়ন, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, বিদেশি প্যাভিলিয়ন, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ, প্রিমিয়ার স্টল, বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল, সাধারণ স্টল ও ফুড স্টল।

মেলার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও মেলার গেট হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের আদলে। মেলায় এবারও থাকছে মা ও শিশুকেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক, এটিএম বুথ, রেডিমেট গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিক্স পণ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহার সামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ক্রোকারিজ, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধন সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার স্টল।

মেলা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিএমপি) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবার সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আমরা শক্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, মেলার প্রত্যেকটি গেটে বাড়তি নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে পুলিশ ও আনসার সদস্য। শুধু মেলায় নয়, মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। চন্দ্রিমা উদ্যান, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে ও পেছনের অংশ, ফুটপাত, রাস্তা, নির্বাচন কমিশনের পেছন এবং আগারগাঁও ফাঁড়ি এলাকায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে পুলিশ সদস্যরা।

পুরো মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করেছি। মেলায় নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ও নজরদারি বহাল রাখতে সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং করা হবে। যানজট মোকাবেলায় ট্রাফিক পুলিশকেও সহযোগিতা করা হবে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেলা আয়োজক কমিটির সচিব আবু হেনা মুর্শেদ জামান বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের অপেক্ষায়।

ইপিবির সূত্র জানিয়েছে, এবারের মেলায় জায়গা পেতে এবার ১৩শ’প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদনের বিপরীতে লটারি ও টেন্ডারের মাধ্যমে মাত্র ৫১৪ স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৬টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা হয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ১৮টি, মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি ও প্যাভিলিয়ন ২৭টি।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবারে মেলা নতুন আঙ্গিকে সাজানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী নকশায় ভিন্নতার পাশাপাশি নান্দনিক গেট, ডিজিটাল লে-আউট প্ল্যান করা হয়েছে। এবারে মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো প্রধান ফটক। গত কয়েক বছর ধরে কার্জন হলের আদলে তৈরি হয়েছিল মেলার প্রধান ফটক। এবার একটু পরিবর্তন করে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চিত্র তুলে ধরা হবে। সে ক্ষেত্রে এবারের ফটক ঢাকা গেটের আদলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। এছাড়া মেলার মধ্যে ডিজিটাল টাচস্কিন থাকবে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন চেনা যাবে।

এবারের মেলার ব্যতিক্রমী আয়োজন বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এবার সেটি আরো তথ্যবহুল করা হবে। এজন্য প্যাভিলিয়নের আয়তন বাড়ানো হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখির পরিচিতির জন্য আলাদা আয়োজন থাকবে। মেলায় গত বছর সুন্দরবনের আদলে কোনো পার্ক ছিল না। এবার সুন্দরবন পার্ক করা হবে। মেলায় এবার মঞ্চ থাকবে। যেখানে প্রতি সপ্তাহে দুদিন লোকজ ঐতিহ্য ধারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন হবে।

জেইউ/এমবিআর/এমএআর/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।