চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৫৭ শতাংশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩১ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭

বিনিয়োগে খরা, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, ব্যাংক আমানতের সুদহার কম ও পুঁজিবাজারে আস্থাহীনতাসহ নানা কারণে এখন সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরে যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ধরেছিল, তার ৫৭ শতাংশ বিক্রি হয়ে গেছে প্রথম চার মাসেই।

জাতীয় সঞ্চয় পরিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই- অক্টোবর-১৭) প্রথম চার মাসের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট আয় দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৫ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। চার মাসের একত্রিত হিসেবে বছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। আর চার মাসে মোট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ অর্জন হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ দিকে চলতি অর্থবছরের একক মাস হিসেবে অক্টোবরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট আয় হয়েছে ৪ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। গত বছরের একই মাসে এটি ছিল ৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধের পর যে পরিমাণ অর্থ অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় নিট বিনিয়োগ। তাই বিনিয়োগের ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা প্রয়োজন অনুযায়ী বাজেটে নির্ধারিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। বিনিময়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের প্রতিমাসে মুনাফা দিতে হয়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কম। ব্যবসা-বাণিজ্যও তেমন ভালো যাচ্ছে না। একই সঙ্গে চলছে বিনিয়োগ মন্দা। ফলে ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পাহাড় জমে গেছে। এতে ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়েই আমানতে সুদহার কমিয়েছে। অন্যদিকে এখন সঞ্চয়পত্রে সুদহার ব্যাংকের চেয়ে বেশি। যার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানোর জন্য অনেকেই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছে।

তবে সঞ্চয়পত্রের এ ঋণের টাকা সরকারকে সঠিক জায়গায় বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন এ অর্থনীতি বিশ্লেষক। তা না হলে এই ঋণ বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করতে হবে।

সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

এসআই/এআরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।