ঝাঁজ কমেনি পেঁয়াজের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ এএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৭

রাজধানীর বাজারগুলোতে ঝাঁজ কমছে না পেঁয়াজের। গত সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়া এই পণ্যটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজের দাম বাড়লেও শেষ সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কমেছে।

কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া এবং খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং বৃষ্টিতে কিছু খেত নষ্ট হওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। আর বাজারে শীতের সবজি সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। অনেক সবজিই এখন ৩০ টাকার নিচে মিলছে। তবে পাকা টমেটোর দাম কিছুটা কমলেও কেজিতে একশ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর আমাদানি করা পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।

রামপুরা মোল্লাবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী মো. জামাল বলেন, পেঁয়াজের আমদানি খরচ বেড়েছে এবং বৃষ্টিতে কিছু খেত নষ্ট হয়েছে, সে জন্য পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বড় ব্যবসায়ীরা। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে বলে আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি।

শান্তিনগরের ব্যবসায়ী মো. শাহিন বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। ৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৮০ টাকায় চলে এসেছে। আবার কিছুদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়, সে কারণে অনেক খেত নষ্ট হয়েছে। খেত নষ্ট হওয়ার কারণে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে বিলম্বিত হচ্ছে। এসব কারণেই পেঁয়াজের দাম না কমে উল্টো বেড়েছে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ এখন বাজারে ভরপুর। সঙ্গে ঝিঙা, পটল, করলা, ধেড়স, ধুনদল, চিচিংগা, বেগুন, শালগম, পাঁকা ও কাঁচা টমেটা সবকিছুর সরবরাহই রয়েছে পর্যাপ্ত।

গত সপ্তাহে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হওয়া পাঁকা টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আর বাজারে নতুন আসা কাঁচা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

গত সপ্তাহ কিছুটা বাড়লেও শিমের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

মুলার দাম কমে ১৫ থেকে ২০ টাকায় এসেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

দাম কমার তালিকায় রয়েছে ঝিঙে, চিচিংগা, ধেড়স, লাউও। গত সপ্তাহে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হওয়া ঝিঙে, চিচিংগার দাম কমে হেয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া ধেড়সের দাম কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা পিচ বিক্রি হওয়া লাউ’র দাম কমে হয়েছে ৩০ টাকা।

bazer-1

করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপিরও দাম কমেছে। ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। আর ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখন ১৫ টাকায় পিস পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ২০ টাকার নিচে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হয়নি।

রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী মো. জামান বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমেছে। ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া টমেটো এখন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা শিমের দাম কমে হয়েছে ৪০ টাকা। ৩০ টাকা পিস বিক্রি করা ফুলকপি এখন বিক্রি করছি ২০ টাকায়। এভাবে সব সজিরই দাম কমেছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের সবজি ভরপুর। আড়তে গেলে কোনো সবজির অভাব নেই। সামনে সবজির সরবরাহ আরও বাড়বে। এতে দাম আরও কমবে বলে আমরা আশা করছি।

সবজির দাম কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে শাকের বাজার। লালশাক ও সবুজশাক আগের সপ্তাহের মতোই ১০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। পুইশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, মুলা শাক ১০ টাকা, পালন শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা আটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সাদা ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতোই ১১০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এমএএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।