নদী আর ভূমির মতো ব্যাংকিং খাতেও চলছে দখল
দেশে আগে নদী আর ভূমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এখন ব্যাংকিং খাতেও চলছে দখলদারিত্ব। যার কোনো বিচার হচ্ছে না। এ ধরনের ঘটনা সমাজের সর্বত্র বিরাজমান। এর প্রভাব পড়ছে সমাজ ব্যবস্থায়। দিনে দিনে সমাজে অসমতা তৈরি হচ্ছে, বৈষম্য বাড়ছে। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্ত রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিরও ঘাটতি রয়েছে।
সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের সমাপনী দিনের প্রথম সেশনে প্যানেল আলোচনায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।
এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে চারটি প্ল্যানারি সেশনে ২০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকার, গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা এসব সেশনে অংশ নেন।
এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে সহযোগিতা করে ইউনাইটেড নেশন ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)। এ ছাড়াও সহযোগিতা করেছে কিউ-ক্যাশ, এনরুট এবং আমরা নেটওয়ার্কস। মিডিয়া পার্টনার ছিল -বণিক বার্তা, ঢাকা ট্রিবিউন এবং চ্যানেল ২৪। ২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে বিআইবিএম।
কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, নদী আর ভূমি দখলের মতোই একের পর এক ব্যাংক দখল চলছে। যার কোনো বিচার নেই। ফলে তৈরি হচ্ছে অসমতা। বাড়ছে বৈষম্য।
তিনি আরও বলেন, আমরা টেকসই উন্নয়নের কথা বলে থাকি। তবে এ জন্য শক্ত রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ঘাটতি রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আর্থিক অবকাঠামোতে দৃশ্যমান গতি আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের দিকে দেশকে এগিয়ে নেয়ায় এর মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আন্ত:ব্যাংক লেনদেনে মোবাইল ব্যাংকিং যুক্ত হয়েছে। ফলে প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীও ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসছে। মোবাইল ব্যাংকিংকে বাংলদেশ ব্যাংক আরও গ্রাহক বান্ধব করতে চায়। এতে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। এ জন্য স্কুল ব্যাংকিং ছাড়াও আর্থিক খাতের বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে ‘ডিজিটালাইজড’ করাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য।
দ্বিতীয় দিনের এ সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএময়ের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট কাজ শুরু করেছে। এ ধরনের অবৈধ লেনদেন অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। কারণ অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের বড় বাঁধা অবৈধ লেনদেন। মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখন তা গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম দায়িত্ব।
এমএ/এএইচ/আইআই